ইতালির রাজধানী রোমের সান্তা মারিয়া ম্যাজোরে গির্জায় প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের সমাধির ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে পাথরের সমাধিতে তাঁর নাম খোদাই করা রয়েছে এবং তার নিচে ক্রুশবিদ্ধ যিশুর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। মূর্তিটির ওপর একটি স্পটলাইটের আলো পড়ছে, আর সমাধির সামনে রাখা একটি সাদা গোলাপ বিশেষভাবে চোখে পড়ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসকে এই গির্জাতেই সমাহিত করা হয়েছে, যা রোমের চারটি প্রধান ব্যাসিলিকার মধ্যে একটি। পোপ হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন তিনি নিয়মিত এখানে আসতেন। গত শনিবার ভ্যাটিকানে তাঁর প্রকাশ্য শেষকৃত্য অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, এবং পরে গির্জায় একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে সোমবার মৃত্যুবরণ করেন। রোববার সকালে গির্জার বাইরে ভিড় জমায় হাজার হাজার মানুষ, যারা প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে প্রয়াত পোপকে শ্রদ্ধা জানান। পোপ ফ্রান্সিস মাতা মেরির প্রতি বিশেষভাবে অনুগত ছিলেন, এবং সান্তা মারিয়া ম্যাজোরে গির্জাটি চতুর্থ শতাব্দীতে নির্মিত প্রথম গির্জা, যা মেরিকে উৎসর্গিত।
গির্জাটি ঐতিহাসিক রোমান কলোসিয়ামের কাছাকাছি অবস্থিত এবং শহরের কোলাহলপূর্ণ কেন্দ্রীয় টার্মিনি স্টেশন থেকেও তেমন দূরে নয়। পোপ ফ্রান্সিসের দীর্ঘদিনের আকর্ষণ ছিল এই গির্জার প্রতি, যা তিনি ২০২২ সালে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মাতা মেরির কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে এখানে সমাহিত হতে চান।
পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানেরা অংশগ্রহণ করেন, এবং লাখ লাখ ক্যাথলিক শ্রদ্ধা জানান। অনুষ্ঠান চলাকালীন বিশাল স্পিকারে প্রার্থনা সংগীত বাজছিল, আর মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া হেলিকপ্টারের শব্দ তা কিছুটা আড়াল করছিল। ৯১ বছর বয়সী কার্ডিনাল জিওভানি বাতিস্তা রে পোপ ফ্রান্সিসের ধর্মীয় অবদানের ওপর ধর্মোপদেশ দেন, বিশেষ করে তাঁর ‘সেতু গড়ো, প্রাচীর নয়’ বার্তাটি তুলে ধরেন।
শেষকৃত্যের পর পোপ ফ্রান্সিসের কফিন রোমের রাস্তায় ধীর গতিতে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং শববাহী গাড়িটি চলে যাওয়ার সময় হাততালি দেন ও হাত নেড়েছিলেন।