রানা প্লাজা ধসের এক যুগ পূর্তিতে সাভারে নিহত শ্রমিকদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আহত শ্রমিক, নিহতদের স্বজন এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকালে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে স্থাপিত অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে তারা শ্রদ্ধা জানান।
এর আগে সকাল ৭টায় বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। নিহত ও আহত শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা, এবং দায়ীদের শাস্তির দাবিতে এই মিছিলটি বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে রানা প্লাজার সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, ক্ষতিপূরণ বিষয়ক আইন সংস্কার করে রানা প্লাজা ও তাজরীন ট্র্যাজেডিতে ক্ষতিগ্রস্তদের জীবনভর আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিক হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা জরুরি।
টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটি দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এক যুগ পার হয়ে গেলেও এর বিচার সম্পন্ন না হওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে বিপুল অর্থ সহযোগিতা এসেছে, কিন্তু এখনও অনেক আহত শ্রমিক চিকিৎসা পাননি, ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন নিহতদের পরিবার।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক যুগ ধরে ভবন মালিক কারাগারে থাকলেও মামলার বিচারকাজ এখনও শেষ হয়নি। অথচ সংশ্লিষ্ট কারখানা মালিকেরা নির্বিঘ্নে চলাফেরা করছেন।’
সকাল থেকেই রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলন, গার্মেন্টস টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এবং গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।