বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক ৮৫ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক জাতীয়

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এই চুক্তিতে সই করেছে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক। বুধবার বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অর্থটি মূলত চট্টগ্রামের বে টার্মিনাল গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ এবং জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আধুনিকায়নে ব্যবহার করা হবে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেয়েল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর শ্রমবাজারে প্রবেশ করা প্রায় ২০ লাখ তরুণের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এ অর্থায়ন কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি বাণিজ্য ও রপ্তানিতে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে সমাজের দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় কর্মজীবনে প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।

‘বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’-এর জন্য ৬৫০ মিলিয়ন ডলার এবং সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প ‘এসএসপিআইআরআইটি’-এর জন্য ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়া হচ্ছে। সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে একটি জলবায়ু সহনশীল বাঁধসহ আধুনিক অবকাঠামো তৈরি করা হবে, যা রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াবে এবং প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ ডলার সাশ্রয় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বে টার্মিনাল দেশের প্রায় ৩৬ শতাংশ কনটেইনার পরিবহনের দায়িত্ব নেবে এবং এটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে উন্নত পরিবহন ও বাজার সংযোগ সুবিধা দেবে। এছাড়া, এই প্রকল্প নারীদের জন্য বন্দর ও বাণিজ্য খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করবে।

অন্যদিকে, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় ৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে নগদ সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তরুণ, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা শ্রমিকরা এতে অগ্রাধিকার পাবেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ও আয়ের সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার সিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে গেয়েল মার্টিন। অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজারও উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, এই অর্থ সহায়তা বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে আসছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক থেকে অনুদান, সুদবিহীন ও সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে ৪৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা পেয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *