ট্রেনের টিকিট যেন হাতে চাঁদ পাওয়া।

জাতীয় বাংলাদেশ

সিলেট-আখাউড়া রেলপথটি ব্রিটিশ আমলের, এবং এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চারটি স্টেশন হলো শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, ভানুগাছ ও শমশেরনগর, যা পর্যটনপ্রবণ মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত। এ অঞ্চলে প্রতিবছর লাখো পর্যটক আসেন, তাছাড়া স্থানীয়রা রেলপথে যাতায়াত করেন। কিন্তু মৌলভীবাজারের রেলস্টেশনগুলোর টিকিট সংগ্রহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহুদিন ধরেই এই সংকট চলমান, ফলে পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সিলেট রুটে প্রতিদিন ছয়টি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে, যার মধ্যে চারটি ঢাকা-সিলেট এবং দুটি চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে চলাচল করে। এই ছয়টি ট্রেনই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে থামে, এবং শমশেরনগর, ভানুগাছ ও কুলাউড়াতেও স্টপেজ রয়েছে। তবে টিকিটের বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার যাত্রীর বিপরীতে মোট ১,৬০০টি টিকিট বরাদ্দ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, মৌলভীবাজারে ছয়টি আন্তনগর ট্রেন চললেও স্টেশনে টিকিট পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, ভানুগাছ ও শমশেরনগর স্টেশনগুলোর ইতিহাস প্রায় ১১০ বছর পুরনো, ব্রিটিশ শাসনামলে এসব স্টেশন চালু হয় এবং তখন থেকে ট্রেনের মাধ্যমে চা ও অন্যান্য পণ্য পরিবহন করা হত। শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, দৈনিক ৫ হাজারের বেশি যাত্রী চলাচল করলেও এখানে মাত্র ১,২৫০টি টিকিট বরাদ্দ থাকে, আর শমশেরনগর ও ভানুগাছ স্টেশনে বরাদ্দ রয়েছে ৩০০টি টিকিট।

শ্রীমঙ্গল স্টেশনের মাস্টার শাখাওয়াত হোসেন ও কুলাউড়া স্টেশনের মাস্টার রুমান আহমেদ জানিয়েছেন, তারা কোনোভাবেই টিকিটের চাহিদা মেটাতে পারছেন না। তবে, তাদের জানান, স্ট্যান্ডিং টিকিটের পরিমাণও ২৫ শতাংশ বাড়ানো সত্ত্বেও চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন জানিয়েছেন, পর্যটকদের সুবিধার জন্য এবং স্থানীয়দের চাহিদার কথা বিবেচনায় ট্রেনের টিকিট বৃদ্ধি নিয়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, এবং আশা করছেন যে টিকিটের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেছেন, অতিরিক্ত পর্যটক কিংবা ছুটির সময় অতিরিক্ত কোচ বরাদ্দ করা হয়ে থাকে, তবে কোচের সীমাবদ্ধতার কারণে সবসময় অতিরিক্ত কোচ দেয়া সম্ভব হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *