ট্রাম্প প্রশাসনের ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপে মার্কিন বাজারে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় বড় ধরনের চাপে পড়েছেন চীনের রপ্তানিকারকেরা। ফলে, যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা পণ্য এখন আর রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না, এবং বাধ্য হয়ে তাঁরা সেগুলো দেশীয় বাজারেই ছাড়ে বিক্রি করছেন। রেড নোট নামক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে দেশীয় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে সক্রিয় হয়েছেন এসব ব্যবসায়ী।
তারা লাইভে দেখাচ্ছেন কীভাবে মার্কিন বাজারের জন্য তৈরি পণ্য—যেমন রাইস কুকার, টোস্টার বা জুসার—এখন স্থানীয়দের কাছে ৯০ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করা হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, গুদামে জায়গা না থাকায় স্টক ফেলার তাগিদেই এই ছাড়।
বেশিরভাগ পণ্যের ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিকভাবে অখ্যাত হলেও কিছু কিছু নামী ব্র্যান্ডের পণ্য যেমন ‘কস্টা কফি’ মগও বিক্রি হচ্ছে। চীনের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজারকে এখন বিকল্প রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করছে রপ্তানিকারকেরা। সরকারও এতে সহায়তা দিচ্ছে এবং জেডিডটকমের মতো ই-কমার্স জায়ান্ট দেশীয় বিক্রিতে সহায়তার জন্য কয়েকশো বিলিয়ন ইউয়ানের তহবিল ঘোষণা করেছে।
এদিকে, গুয়াংজুতে অনুষ্ঠিত ক্যান্টন ফেয়ারে অংশ নেওয়া রপ্তানিকারকেরা জানান, মার্কিন বাজার কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে বলে তারা এখন বিকল্প বাজারের দিকেই ঝুঁকছেন। যদিও কেউ কেউ রেড নোটে এই প্রচারণাকে নিছক ‘মার্কেটিং কৌশল’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এসব লাইভ স্ট্রিম শুধু বিক্রির হাতিয়ার নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য সংঘাতে চীনের জাতীয়তাবাদী মনোভাবকেও উসকে দিচ্ছে। ‘চীন পারবে’, ‘কারখানা বাঁচাও’ বা ‘প্রতিরোধ করো’—এমন হ্যাশট্যাগ এখন চীনা অনলাইন দুনিয়ায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।