ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত এই আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৫১ হাজার মানুষ। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ১১ হাজার। ধারণা করা হচ্ছে, এই নিখোঁজ ব্যক্তিদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ, ফলে মোট প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ৬২ হাজারে পৌঁছেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, গত সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০,৯৩৮ জনে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ২৭৪ জন।
লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাতে জানিয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের বেশির ভাগই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং তাঁদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ফলে তাঁদেরও মৃতদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
এ পরিস্থিতির মধ্যেই হামাস জানিয়েছে, যদি গাজায় একটি ‘গুরুতর ও স্থায়ী’ যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, তবে তারা ইসরায়েলের বন্দিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত। হামাসের সিনিয়র নেতা তাহের আল-নুনু বলেন, তাঁরা একটি প্রকৃত যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তার বিনিময়ে সমস্ত বন্দি ইসরায়েলিকে মুক্তি দিতে রাজি।
তিনি আরও বলেন, ‘ইস্যুটি কেবল বন্দির সংখ্যা নয়, বরং ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না মানা, যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি এবং অব্যাহত হামলাই মূল সমস্যা।’ তাই হামাস চায়, ইসরায়েল যেন একটি স্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত চুক্তিতে আবদ্ধ থাকে এবং আন্তর্জাতিক গ্যারান্টির মাধ্যমে সেই চুক্তি বাস্তবায়ন হয়।
এদিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট জানিয়েছে, হামাসকে নতুন একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস ১০ জন জীবিত বন্দিকে মুক্তি দেবে, আর যুক্তরাষ্ট্র এই প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনায় প্রবেশের জন্য ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গ্যারান্টি দেবে।
এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে মিসর ও কাতার, যারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে গাজায় একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।