ইসরায়েল গাজা থেকে রাফাহকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহকে ঘিরে ফেলেছে এবং শহরটিকে গাজা উপত্যকা থেকে বিচ্ছিন্নকারী মোরাগ করিডরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বরাতে জানা গেছে এই তথ্য।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, শনিবার খান ইউনিসসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের সরে যেতে নতুন করে নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এর আগে ওই অঞ্চলগুলো থেকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায়। এর জবাবে আইডিএফ সেসব এলাকায় আরও বড় পরিসরে অভিযান চালানোর হুঁশিয়ারি দেয়, যার অংশ হিসেবেই লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, শুধু খান ইউনিস নয়—কিজাম আন নাজার, কিজাম আবু রাশওয়ান, আল সালাম, আল মানারা, আল কুরাইন, আল বাতন আল সামিন, জুর্ত আল লত, আল ফাখারি এবং বানি সুহাইলার বাসিন্দাদের আল-মাওয়াসি এলাকায় সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই দিনে গাজার বিভিন্ন অংশে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় অন্তত দুজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

মোরাগ করিডরকে একটি নিরাপত্তা করিডর হিসেবে উল্লেখ করেছে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, “মোরাগ করিডর এখন একটি ইসরায়েলি নিরাপত্তা করিডরে রূপ নিয়েছে। একই সঙ্গে নেতসারিম করিডর আরও বিস্তৃত করে গাজা উপত্যকাকে দুই ভাগে ভাগ করা হবে।”

তিনি বলেন, “যারা স্বেচ্ছায় এই এলাকা ত্যাগ করতে চায়, তাদের চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।” সেইসঙ্গে এটিকে গাজাবাসীর জন্য ‘শেষ আলটিমেটাম’ হিসেবেও উল্লেখ করেন কাৎজ। তিনি বলেন, “হামাসকে সরিয়ে দাও—না হলে শিগগিরই গাজার অধিকাংশ এলাকায় অভিযান আরও তীব্র হবে। যুদ্ধ থামাতে হলে হামাসকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে এবং বন্দিদের ফিরিয়ে দিতে হবে।”

এই পরিস্থিতি নিয়ে কিংস কলেজ লন্ডনের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক রবার্ট গেইস্ট পিনফোল্ড আলজাজিরাকে বলেন, “যদিও ইসরায়েল বলছে মোরাগ করিডর কেবলমাত্র সামরিক প্রয়োজনেই তৈরি, বাস্তবে এটি গাজা নিয়ন্ত্রণে রাখার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ।”

তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েল সব সময় গাজা উপত্যকার প্রবেশ ও প্রস্থান নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেয়েছে। নিরাপত্তার অজুহাতে তারা এই অবকাঠামোগুলো ব্যবহার করে গাজাকে দমন করার কৌশল নিয়েছে।” তিনি যোগ করেন, “মোরাগ, নেতসারিম ও ফিলাডেলফি করিডরের নাম ও অবস্থান উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে—গাজার বিভিন্ন শহরকে বিচ্ছিন্ন করা এবং ইসরায়েল যেন যেকোনো সময় চাপে ফেলতে পারে, সেই লক্ষ্যেই এগুলো গড়ে তোলা হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *