মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, রাশিয়া এখনও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি। এ কারণে তিনি রাশিয়ার ওপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও ১২ মাস বাড়িয়েছেন। বিষয়টি মার্কিন ফেডারেল সরকারের রেজিস্ট্রার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতির মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে।
রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণের পর ওয়াশিংটন প্রথম রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেবার একটি গণভোটের মাধ্যমে ক্রিমিয়া রাশিয়ার অংশ হয়ে যায়। পরবর্তীতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ এবং ২০২২ সালে ইউক্রেন সংঘাত আরও বেড়ে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়।
সর্বশেষ ট্রাম্পের অনুমোদিত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শুরু হবে ২০২৫ সালের ১০ এপ্রিল থেকে। এতে বলা হয়েছে, “রুশ সরকারের নির্দিষ্ট ক্ষতিকর বৈদেশিক কার্যকলাপের কারণে ঘোষিত জাতীয় জরুরি অবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।”
এই সিদ্ধান্তটি মূলত ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষরিত ১৪০২৪ নম্বর নির্বাহী আদেশের ভিত্তিতে নেয়া হয়েছে। সেই আদেশে রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা, বৈদেশিক নীতি ও অর্থনীতির জন্য “অস্বাভাবিক ও নজিরবিহীন হুমকি” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।
বাইডেনের আদেশে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র রাষ্ট্রগুলোর গণতান্ত্রিক নির্বাচন ও প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল করতে চায়, জাতীয় নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলোর স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়, এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করছে।
গত মাসের শেষ দিকে ট্রাম্প মন্তব্য করেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে এখনও তীব্র বিরোধ বিরাজমান। তিনি আরও বলেন, যদি যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ হয় এবং তার জন্য রাশিয়া দায়ী হয়, তবে তিনি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ বিষয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে এবং রাশিয়া কূটনৈতিকভাবে সংঘাত সমাধানে আগ্রহী। মার্চ মাসে ট্রাম্প ইউক্রেন ও রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধের প্রস্তাব দেন, যা উভয় পক্ষ প্রকাশ্যে সমর্থন করে। রাশিয়া ইউক্রেনকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার লক্ষ্যে আংশিক যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।