ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে সহায়তার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র আবারও নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পাঁচটি ইরানি সংস্থা ও একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এই পদক্ষেপ এমন এক সময় নেওয়া হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান আলোচনার টেবিলে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েক দিন আগেই ইরানের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, এবং ধারণা করা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে আলোচনার সূচনা হতে পারে খুব শিগগিরই।
লেবাননের গণমাধ্যম আল-মায়েদিন জানায়, বুধবার মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে ইরানের অ্যাটমিক এনার্জি অর্গানাইজেশন এবং এর অধীনস্থ ইরান সেন্ট্রিফিউজ টেকনোলজি কোম্পানি। এছাড়া আতবিন ইস্তা টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির প্রধান মজিদ মোসাল্লাতকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। তিনি বিদেশি যন্ত্রাংশ সংগ্রহের মাধ্যমে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ভূমিকা রেখেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা এমন সময়ে এল, যখন ইরান-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিরা ওমানে প্রথম দফার পরোক্ষ আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আন্তরিকতা নিয়ে এগোয়, তাহলে একটি চুক্তি সম্ভব।
যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে ২০১৫ সালের চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি এখন একটি ‘নতুন চুক্তি’র কথা বলছেন, পাশাপাশি ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ এবং প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপের হুমকিও দিয়ে যাচ্ছেন।
তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা ও হুমকির নিন্দা করেছে এবং এসব পদক্ষেপকে আলোচনার প্রস্তাবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেছে। আরাঘচির বক্তব্য এমন সময় এসেছে, যখন শনিবার ওমানে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের পরোক্ষ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসও ইরানি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এই বৈঠকের খবর নিশ্চিত করেছে।
এর আগে হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান পরমাণু ইস্যুতে সরাসরি আলোচনায় রয়েছে এবং শনিবার পর্যন্ত তা চলবে। তাঁর মতে, একটি চুক্তি হলে তা সবার জন্যই ভালো হবে।
তেহরানের পরমাণু উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণে আনতে সরাসরি আলোচনার পক্ষে কথা বলছেন ট্রাম্প। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এ আলোচনাকে ‘দায়িত্বশীল ও বাস্তবমুখী’ উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে, আলোচনায় অগ্রগতি না হলে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে পারে—এমন শঙ্কাও বাড়ছে।