ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের একটি ম্যাচে ফের ম্যাচ ফিক্সিং ইস্যু আলোচনা সৃষ্টি করেছে। গতকাল মিরপুরে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচে শাইনপুকুরের দুই ব্যাটার, রহিম আহমেদ ও মিনহাজুল আবেদীন সাব্বিরের স্ট্যাম্পিং আউটের ঘটনা অনেককেই অবাক এবং ক্ষুব্ধ করেছে। মুহূর্তেই সেই আউটের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায়।
এ পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এবং তাদের দুর্নীতি দমন ইউনিট (আকসু)। আজ দুপুরে মিরপুরের একাডেমি মাঠে আকসুর প্রধান মেজর (অব.) মো. রায়ান আজাদ উপস্থিত থেকে মাঠ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করেন। তদন্তে শাইনপুকুরের দুই বিতর্কিত ক্রিকেটারকে ডেকে এনে পুনরায় একইভাবে আউটের পরিস্থিতি তৈরি করা হয়। এরপর ঘটনাটি বিশ্লেষণ করে ভিডিও ধারণ করা হয়। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলা এই তদন্তের পর দুই ক্রিকেটারকে বিসিবির মূল কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মিরপুরে শাইনপুকুরের দুই ব্যাটারের আউটের ধরণ ছিল অনেকের কাছে অস্বাভাবিক। বল পিচ করার আগেই ব্যাটারদের উইকেটের বাইরে দাঁড়িয়ে স্ট্যাম্পিং হওয়া নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। অনেকেই সন্দেহ করেছেন যে ম্যাচটি ‘ফেয়ার প্লে’র নীতি লঙ্ঘন করেছে। কিছু অনুগ্রহ জানাচ্ছিলেন যে ম্যাচটি ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে।
বিসিবি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা সর্বোচ্চ গুরুত্বে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। বোর্ড আরো বলেছে, “ক্রিকেটের ন্যায্যতা ও নৈতিকতার প্রশ্নে বিসিবি আপসহীন। যেকোনো ধরনের দুর্নীতি বা খেলার নৈতিকতা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আমাদের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রয়েছে।” বিসিবি এই বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করবে এবং প্রমাণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
লিগের কারিগরি কমিটিও ম্যাচটি নিয়ে তদন্ত করছে, তবে মাঠে গিয়ে ভিডিও পুনর্গঠন এবং তদন্ত চালানো বিসিবির ইতিহাসে সম্ভবত প্রথম ঘটনা। এখন দেখার বিষয়, এই তদন্তের পর শাস্তির মুখে পড়েন কিনা সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার বা দল।
বিসিবির বিভিন্ন কোচ, কর্মকর্তা ও সাবেক ক্রিকেটাররা সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আছেন। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফীসও প্রকাশ্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন। সাবেক ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, “ক্রিকেট এত তুচ্ছভাবে যেন কেউ না দেখে, এত নিচে যেন না নামায়।”
অন্যদিকে আকসুর প্রধান মেজর রায়ান আজাদ ফেসবুকে রসিকতা করে ভিডিওটি শেয়ার করে লেখেন, “বোকা না চালাক আমার মত! চা পানের দাওয়াত রইল।” তাঁর এই মন্তব্যও দ্রুত ক্রিকেট মহলে আলোচিত হয়।