বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের বেতন বৃদ্ধি করেছে। বিসিবি আগেই জানিয়েছিল, এবার তারা বিশেষভাবে টেস্ট ক্রিকেটারদের আর্থিক নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। মুমিনুল হক, তাইজুল ইসলামসহ শুধুমাত্র টেস্ট খেলা ক্রিকেটারদের যেন আর্থিক দুশ্চিন্তার কারণে খেলায় মনোযোগে ব্যাঘাত না ঘটে, সে লক্ষ্যে বেতন ও ম্যাচ ফি মিলিয়ে তাদের বার্ষিক আয় কোটি টাকার ঘরে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। একই সুবিধা পাচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্তও।
টেস্টে ভালো করতে হলে দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কাঠামোকে আরও উন্নত করা জরুরি। তবে সেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য বিসিবি কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। সূত্র বলছে, এবারও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতন বাড়ানো হয়নি। ‘এ’ গ্রেডের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটাররা এখনো ৩৫ হাজার, ‘বি’ গ্রেডের ৩০ হাজার এবং ‘সি’ গ্রেডের ২৫ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন। ‘এ’ গ্রেডে রয়েছেন এনামুল হক বিজয়, নুরুল হাসান সোহান ও মোহাম্মদ মিঠুন। অনেক ক্রিকেটারের মধ্যে এই বেতন কাঠামো নিয়ে অসন্তোষ কাজ করছে। এক ঘরোয়া ক্রিকেটার জানিয়েছেন, সম্প্রতি কোয়াবের (ক্রিকেটারদের সংগঠন) এক সভায় তারা বিষয়টি তুলেছিলেন, যেখানে তামিম ইকবালসহ অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “সব মনোযোগ জাতীয় দলের দিকেই থাকে। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেতন যতটা বাড়ে, প্রথম শ্রেণির চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে ততটা হয় না।”
বেতন না বাড়লেও বিসিবি এবার চুক্তিবদ্ধ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের সংখ্যা ৮৪ থেকে বাড়িয়ে ১০০ জন করেছে। পাশাপাশি ম্যাচ ফি ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) গত বছর ম্যাচ ফি ছিল সর্বোচ্চ ৬৫ হাজার টাকা, যা এবার বেড়ে হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) ম্যাচ ফি ৮০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
গোলাপি বলের বিসিএল নিয়ে অনিশ্চয়তা
সাধারণত ঘরোয়া মৌসুমের শুরুতে এনসিএল আয়োজনের পর শীতকালেই ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রথম শ্রেণির লিগ বিসিএল অনুষ্ঠিত হয়। তবে গত মৌসুমে এনসিএলের পর বিসিএল আর আয়োজন করা হয়নি। বিসিবি এবার মে মাসে এটি আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। যেহেতু বাংলাদেশ সাধারণত শীতকালে ঘরের মাঠে কম টেস্ট খেলে এবং টেস্টের বেশিরভাগ ম্যাচ গরমের সময় পড়ে, তাই ক্রিকেটারদের গরমের কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে বিসিএলও গরমের সময় আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তীব্র গরমের কথা বিবেচনা করে বিসিবি এক-দুটি চার দিনের ম্যাচ গোলাপি বলে ফ্লাড লাইটের আলোয় আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিল। তবে নতুন কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। মে মাসে মেয়েদের ইমার্জিং টিমের খেলা, নিউজিল্যান্ড ‘এ’ ও বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ম্যাচও রয়েছে। ফলে মিরপুর, সিলেট ও চট্টগ্রামের ফ্লাড লাইট সুবিধাসম্পন্ন ভেন্যু সহজে পাওয়া যাবে না। এসব বিবেচনায় সর্বোচ্চ এক-দুটি ম্যাচ গোলাপি বলে আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান জানিয়েছেন, এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, “গরমের কথা মাথায় রেখে ফ্লাড লাইটে খেলানোর পরিকল্পনা করেছিলাম। বিসিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ হওয়ায় স্পন্সর প্রয়োজন, তাই আকর্ষণীয় করতে চেয়েছিলাম। তবে কিছু জটিলতা আছে। আমাদের সামনে কোনো গোলাপি বলের টেস্টও নেই। তিন-চার দিনের মধ্যে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”