মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহেও শেষ হয়নি পাঠ্যবই বিতরণ, এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ সম্পন্নের আশা
শিক্ষার্থীদের হাতে এখনও সব পাঠ্যবই পৌঁছায়নি মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহেও। তবে সরকার আশা করছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ছাপা ও বিতরণ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, “১ কোটি ৮ লাখ ৫ হাজার বই এখনও মুদ্রিত হয়নি। তবে সরকার আশাবাদী, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ছাপা ও বিতরণ কাজ সম্পন্ন করা যাবে। মার্চের মাঝামাঝিতে সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে।”
সোমবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে বই ছাপা ও বিতরণের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন তিনি।
বই বিতরণে বিলম্ব
আজাদ মজুমদার জানান, এ বছর ৩৯ কোটি ৬০ লাখ পাঠ্যবই বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছিল। এর মধ্যে ৩৮ কোটি ২৯ লাখ ৬১ হাজার কপি ইতোমধ্যে ছাপা হয়েছে, যা মোট বইয়ের ৯৭.২%। এসব বইয়ের সিংহভাগ বিতরণ করা হলেও ২ কোটি ৩৭ লাখ কপি এখনও বিতরণের অপেক্ষায় আছে।
এখনও মুদ্রিত হয়নি মূলত শারীরিক শিক্ষা, গ্রন্থবিজ্ঞান ও ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের বই। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ৪৫ হাজার বই মুদ্রিত হচ্ছে, তাই দ্রুতই বাকি বইগুলোর কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিলম্বের কারণ
প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশকে এ বছর ১ জানুয়ারি বই পায়নি, তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রাক-প্রাথমিক, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই বিতরণও কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে।
আজাদ মজুমদার জানান, “আমদানি করা কাগজ খালাসে দেরি হওয়ায় বই ছাপানোর কাজ পিছিয়ে গেছে। এছাড়া, চীনের নববর্ষ থাকায় সরবরাহে কিছু সমস্যা হয়েছে।”
সরকারের লক্ষ্য ছিল ১০ মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করা, তবে সেই লক্ষ্য কিছুটা পিছিয়ে যাচ্ছে।
মান বজায় রাখার চেষ্টা
সরকারের পক্ষ থেকে এই বছর শতভাগ বই বাংলাদেশেই ছাপানো হয়েছে, এবং কাগজ ও বাঁধাইয়ের মান নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান আজাদ মজুমদার।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আগের সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান ইচ্ছাকৃতভাবে বই ছাপানোর প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টা করেছে।
পরবর্তী বছরের প্রস্তুতি
ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি জানান, আগামী বছরের পাঠ্যবই মুদ্রণের প্রক্রিয়া মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে।
সিলেবাস সংক্ষিপ্তকরণের পরিকল্পনা নেই
বই বিতরণের বিলম্বের কারণে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “প্রতি বছরই পাঠ্যবই বিতরণে এই পরিমাণ সময় লাগে। গত বছরও বই বিতরণ শেষ হয়েছিল ৭ মার্চ। তাই এই বছরও শিক্ষাবর্ষ বা সিলেবাস কমানোর প্রয়োজন হবে না। তবে যদি প্রয়োজন হয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।”