অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান নিয়ে অভিনয়শিল্পীদের থাকে কত স্বপ্ন, কত প্রস্তুতি! বিশেষ করে অস্কারের মতো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হলে তো উচ্ছ্বাসের শেষ থাকে না। মাসের পর মাস চলে বিশেষ গাউন ও গয়না তৈরির আয়োজন। তবে এই দিক থেকে একেবারেই ব্যতিক্রম ছিলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী ক্যাথরিন হেপবার্ন। সর্বোচ্চবার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেও কখনো অস্কার নিতে যাননি তিনি!
হলিউডে ছয় দশকের বেশি সময় ধরে রাজত্ব করেছেন ক্যাথরিন হেপবার্ন। মাত্র ২৬ বছর বয়সে, ১৯৩৪ সালে, ‘মর্নিং গ্লোরি’ সিনেমার জন্য তিনি প্রথম অস্কার জেতেন। অভিনেত্রী হিসেবে তার অভিষেক হয় তার দুই বছর আগে। এরপর দীর্ঘ অপেক্ষার পর ১৯৬৮ সালে ‘গেজ হু ইজ কামিং টু ডিনার’ সিনেমার জন্য দ্বিতীয়বার অস্কার জেতেন। এর পরের বছরই ‘আ লায়ন ইন উইন্টার’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তৃতীয়বার এবং ১৯৮২ সালে ‘অন গোল্ডেন পন্ড’ সিনেমার জন্য চতুর্থ ও শেষবার অস্কার জয় করেন তিনি।
এই কৃতিত্ব আজও অক্ষুণ্ণ। ক্যাথরিন হেপবার্ন চারবার সেরা অভিনেত্রীর অস্কার জিতেছেন, যা আর কোনো অভিনেত্রীর পক্ষে সম্ভব হয়নি। তার কাছাকাছি রয়েছেন ‘নোম্যাডল্যান্ড’খ্যাত ফ্রান্সেস ম্যাকডোরম্যান্ড, যার ঝুলিতে আছে তিনটি অস্কার। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় হলো, এতবার জিতেও হেপবার্ন কখনো অস্কার নিতে অনুষ্ঠানে হাজির হননি!
যতটা দক্ষ অভিনেত্রী ছিলেন তিনি, ব্যক্তিজীবনে ছিলেন ততটাই দৃঢ়চেতা। ফিল্মি পার্টিতে তার আগ্রহ ছিল কম, সংবাদমাধ্যম থেকেও দূরে থাকতেন। কোনো অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানেই যেতেন না। সবসময়ই বলতেন, ‘এসব পুরস্কারের কোনো মূল্য নেই। আমার কাজই আমার আসল পুরস্কার।’
তবে একবারই অস্কারের মঞ্চে দেখা গিয়েছিল ক্যাথরিন হেপবার্নকে—১৯৭৪ সালে। সেবারও নিজের পুরস্কার নিতে নয়, বরং বন্ধু ও প্রযোজক লরেন্স ওয়েইনগার্টেনকে আরভিং জি থালবার্গ মেমোরিয়াল পুরস্কার দিতে এসেছিলেন।
সিনেমার পাশাপাশি মঞ্চনাটকেও তার প্রতিভার দ্যুতি ছড়িয়েছে। অভিনয় করেছেন ৪৪টি সিনেমা, ৮টি টেলিফিল্ম এবং ৩৩টি মঞ্চনাটকে। অস্কার ছাড়াও জিতেছেন ব্রিটিশ একাডেমি ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস, এমি অ্যাওয়ার্ডস, গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডস, স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড অ্যাওয়ার্ডস। সম্মানিত হয়েছেন কান, ভেনিসসহ বিশ্বের বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবে।