রমজান মাসে ফলের দাম বেড়ে গেছে

জাতীয় দেশজুড়ে বাংলাদেশ

এক বছর পর আবারও ফিরে এসেছে পবিত্র রমজান। রোজা শেষে ইফতারে নানা ধরনের খাবারের পাশাপাশি ফলেরও বিশেষ গুরুত্ব থাকে। খেজুর, আপেল, কমলা, মাল্টা, আঙুর, বেদানা সহ অন্যান্য ফলের কদর বেড়ে যায় এই সময়ে। তবে এবারে ফলের দাম এমনভাবে বেড়ে গেছে যে, অনেকের জন্যই তা নাগালের বাইরে। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদের জন্য এ ফলগুলো কিনতে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফল ব্যবসায়ীরা জানান, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ফলের দাম আগেই বাড়তে শুরু করেছে, এবং জানুয়ারি মাসে সরকার ফল আমদানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করার ফলে দাম আরো এক দফা বেড়েছে। শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে ফল ব্যবসায়ীরা বন্দরে ফল খালাসের হুমকি দিলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি, ফলে আরও বাড়তি দামে ফল খালাস করতে হয়েছে।

রমজান মাসে ফলের বিক্রি বাড়ে, তবে চড়া দামে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তরমুজ, আনারস, পেঁপে, পেয়ারা, কলার দাম বেড়েছে। বিশেষ করে ইফতারের শরবতের অন্যতম উপকরণ লেবুর দাম এখন ২৫ টাকা পিস। এক হালি লেবুর দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে।

রাজধানীর বাজারে, এক কেজি আপেলের দাম ৩২০ টাকা, গ্রিন আপেল ৪২০ টাকা, মাল্টা ৩০০ টাকা, কমলা ২৮০ টাকা, চায়না (মোটা) কমলা ৩২০ টাকা, আঙুর (কালো) ৪২০ টাকা, আঙুর (সবুজ) ৩৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এই দাম দু-তিন দিন আগেও ২০ থেকে ২৫ টাকা কম ছিল।

খেজুরের দামও বেড়েছে। সাধারণ মানের খেজুর এখন ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় পাওয়া যেত। বিশেষ ধরনের খেজুর যেমন আজোয়া, মরিয়ম, মেডজুল, মাব্রুম খেজুরের দাম ১০০০ থেকে ১৪০০ টাকা।

তরমুজের দাম এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি, আর ছোট সাইজের তরমুজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। আনারসের দামও বেড়ে ৫০ থেকে ৭০ টাকা হয়ে গেছে। পেঁপে এবং পেয়ারা প্রতি কেজিতে ১৫০ এবং ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগেও কম ছিল। কলার দামও প্রতি ডজন ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।

ডাবের দামও বেড়েছে। ছোট আকারের ডাব ১০০-১২০ টাকা, আর বড় আকারের ডাব ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এক ক্রেতা আবদুল হালিম বলেন, “রমজান মাস এলেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পণ্যের দাম কমানোর প্রতিযোগিতা হয়, কিন্তু আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। কলার দাম এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০ টাকা, আজ তা ৮০ থেকে ১০০ টাকা। লেবুর হালিতে ৫০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। আপেল ও খেজুরের দামও বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।”

এক ফল বিক্রেতা আব্দুল হালিম বলেন, “বাদামতলীর পাইকারি বাজারে ফল কিনতে গিয়ে আমার নিজেরই কষ্ট হচ্ছে, দাম এত বাড়ল কীভাবে? তবে পাইকারি বাজারের দাম বাড়লে আমাদের কিছু করার থাকে না।” আরেক বিক্রেতা আরিফ জানান, “খেজুরের ওপর বর্তমানে ৩৮.৭০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়, আগে যা ছিল ৬৩.৬ শতাংশ, তবে শুল্ক কমানো হলেও মানুষের সে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *