২০২৩ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘পাপ’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউডে আত্মপ্রকাশ করেন নায়িকা জাকিয়া কামাল মুন। দুই বছর পর জানা যায়, সিনেমাটি নির্মাণের জন্য মুন জাজের কর্ণধার আবদুল আজিজকে ৬০ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। কিন্তু সময়মতো টাকা ফেরত না পাওয়ায় গত বছর মুন আজিজের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ১৯ ফেব্রুয়ারি আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক লিখিত চুক্তির মাধ্যমে মুন ৬০ লাখ টাকা আজিজকে দেন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, আজিজ প্রোডাকশনের কাজ দেখাশোনা করবেন এবং কাজ শেষ হলে মুনকে পূর্ণাঙ্গ হিসাব দেবেন। তবে প্রোডাকশন শেষ হওয়ার পর আজিজ মুনকে কোনো হিসাব দেননি এবং ওই বছরের মার্চে কাজ শেষ করার কথা ছিল। সময়মতো টাকা ফেরত না দেওয়ায় মুন বারবার নোটিশ পাঠান, কিন্তু আজিজ কোনো সাড়া দেননি। এদিকে, ২০২২ সালের মে মাসে আবদুল আজিজ ‘পাপ’ সিনেমাটি ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় এক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করেন।
মুন অভিযোগ করেছেন যে, আজিজ টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং হুমকি দিয়েছেন যে, মুনের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেবেন। এছাড়া, মুন আরও দুটি সিনেমায় কাজ করার কথা ছিল, ‘পাপ-২’ এবং ‘বিলবোর্ড সুন্দরী’, কিন্তু পরবর্তীতে মুন ওই চুক্তি অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি, যা তার ক্যারিয়ারে বড় ক্ষতি করেছে। তিনি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চুক্তির শর্তাবলি ভঙ্গের অভিযোগে মুন আজিজের বিরুদ্ধে ৪০৬/৪২০/৫০৬ ধারায় মামলা করেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়, এবং পিবিআই তদন্তে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করার পর আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এ বিষয়ে মুন বলেছেন, “আজিজ টাকা ফেরত দেননি এবং আমাকে বিভিন্ন প্রযোজককে বলেছেন, যেন আমাকে সিনেমায় না নেওয়া হয়।” তিনি আরও বলেন, “ঈদে ‘পাপ-২’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সে বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। শুটিংও শুরু হয়নি।” মুনের দাবি, তিনি একাধিক সিনেমায় অর্থ বিনিয়োগ করেছেন, তবে আজিজ টাকা ফেরত না দেওয়ার পাশাপাশি তাকে আরও কাজ করতে বাধা দিয়েছেন।
এছাড়া, ২০১২ সালে ‘ভালোবাসার রঙ’ সিনেমার মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন আবদুল আজিজ। তিনি ঋণখেলাপির তালিকাতেও আছেন এবং তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। জনতা ব্যাংক, শুল্ক গোয়েন্দা, তদন্ত অধিদপ্তর এবং দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।