গাজায় নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি হয়ে গেছে। এর মধ্যে অন্তত ২-৩ হাজার লোককে ইসরায়েল গোপনে আটক করেছে বা গুম করেছে। পাশাপাশি, গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে প্রতিনিয়ত ছিন্নভিন্ন এবং পচে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। গত কয়েক দিনে ৭ শতাধিক অজ্ঞাত পরিচয় মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, যাদের অধিকাংশের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এ তথ্য পাওয়া গেছে লন্ডনভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্য সংবাদমাধ্যম ‘মিডল ইস্ট মনিটর’ এর প্রতিবেদনে। পোল্যান্ডের জাগিয়েলনিয়ান ইউনিভার্সিটির পলিটিক্যাল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ সেন্টার সম্প্রতি জানায়, গাজায় নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের মধ্যে ২-৩ হাজার লোককে গোপনে আটক করা হয়েছে বা নিরুদ্দেশ করা হয়েছে ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। ফিলিস্তিনি ইনফরমেশন সেন্টার জানিয়েছে, গুম হওয়া লোকদের অবস্থান সম্পর্কে খুব কম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
ফিলিস্তিনি ইনফরমেশন সেন্টারের মতে, অধিকাংশ নিখোঁজ ব্যক্তি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বা এমন অঞ্চলে আটকা আছেন যেখানে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তাদের মতে, ইসরায়েলি বাহিনী এমন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, যার কারণে নিখোঁজদের সংখ্যা সঠিকভাবে নথিভুক্ত করা কঠিন এবং উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। এ পরিস্থিতি মানবিক সংকটকে আরও প্রকট করে তুলছে।
সেন্টার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়, যাতে মানবিক সহায়তা দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে পৌঁছাতে পারে এবং উন্নত ফরেনসিক ও ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিখোঁজদের শনাক্তকরণ বাড়ানো হয়। পাশাপাশি, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক সমন্বয় ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা জানানো হয়েছে, যাতে ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করা যায় এবং দোষীদের বিচার করা সম্ভব হয়।
গাজা সিভিল ডিফেন্স জানায়, গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থান থেকে ৭ শতাধিক মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অধিকাংশ মরদেহ এতটাই বিকৃত যে, তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মেজর মাহমুদ বাসাল বলেন, উপযুক্ত পরীক্ষাগার না থাকার কারণে শনাক্তকরণ সম্ভব হচ্ছে না এবং উদ্ধারকর্মীরা প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না পাওয়ায় ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে পারছেন না।
বাসাল আরও বলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারের বেশি মরদেহ আটকা পড়ে রয়েছে, কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা না হবে, ততক্ষণ এই সংকট অব্যাহত থাকবে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্ভোগের অবসান সম্ভব হয়।