শান্তিচুক্তির আড়ালে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ গ্রহণযোগ্য নয়: মাখোঁ

আন্তর্জাতিক

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ইউক্রেনের যেকোনো শান্তিচুক্তিতে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা থাকা জরুরি। এই শান্তি ইউক্রেনের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে হওয়া উচিত নয়, বরং এটি এমন একটি চুক্তি হওয়া প্রয়োজন, যেখানে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত থাকবে।

গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মাখোঁ।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যয় ও দায়িত্ব কেবল যুক্তরাষ্ট্রের নয়, ইউরোপীয় দেশগুলোরও তা বহন করা উচিত। তবে, ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

এর জবাবে মাখোঁ বলেন, ইউরোপ নিরাপত্তার দায়িত্ব আরও সমানভাবে ভাগ করে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোঝে। তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার আক্রমণের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে হওয়া এই আলোচনায় একটি সম্ভাব্য সমাধানের পথ উন্মোচিত হয়েছে।

যদিও দুই নেতা আন্তরিকভাবে বৈঠক শেষ করেন, তবে ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিশেষ করে, যে কোনো শান্তিচুক্তিতে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না এবং পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে—এসব বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পার্থক্য দেখা যায়।

ট্রাম্প বলেন, তিনি যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি চান এবং একবার তা কার্যকর হলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাশিয়া সফর করবেন।

অন্যদিকে, মাখোঁ আরও সুপরিকল্পিত একটি কৌশলের পক্ষে মত দেন, যেখানে প্রথমে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে, এরপর দীর্ঘমেয়াদে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি বিস্তৃত শান্তিচুক্তি করা হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুত শান্তি চাই, তবে এমন কোনো চুক্তি চাই না, যা দুর্বল বা অসম্পূর্ণ।’

তবে, ইউক্রেনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে দুই নেতা একমত হন।

মাখোঁ বলেন, ‘শান্তিরক্ষী বাহিনী সংঘাতের অংশ হবে না। তারা সম্মুখসারিতে থাকবে না, বরং শুধু শান্তি নিশ্চিত করার জন্য সেখানে অবস্থান করবে।’

এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন কোনো আপত্তি করবেন না বলেই মনে করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি এবং তিনি এতে কোনো আপত্তি জানাননি।’

মাখোঁ সাম্প্রতিক সময়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান এবং বলেন, ‘এটি করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে।’

রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের তৃতীয় বার্ষিকীর প্রেক্ষাপটে মাখোঁ ও ট্রাম্পের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *