শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খলা এড়াতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: র‍্যাব

জাতীয় দেশজুড়ে বাংলাদেশ

নিষিদ্ধঘোষিত দল ও সংগঠনের সদস্যরা যেন মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়ে তৎপর রয়েছে র‍‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে শহীদ মিনারমুখী রাস্তার মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় তল্লাশির মাধ্যমে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে বাহিনীটি।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) র‍্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি মুত্তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান –

তিনি বলেন, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়াও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করবেন। একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ অন্যান্য শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

এএসপি মুত্তাজুল ইসলাম জানান, সার্বিকভাবে সব ধরনের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে র‌্যাবও একুশে ফেব্রুয়ারির নিরাপত্তা জোরদার করেছে। শহীদ দিবস উপলক্ষে এরই মধ্যে জারিকৃত আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক নির্দেশনা বাস্তবায়নে র‌্যাব ফোর্স কাজ করছে।

আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক নির্দেশনা বাস্তবায়নে র‌্যাব ফোর্স যেসব কাজ করবে

১। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে যে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি রোধকল্পে ঢাকাসহ সারাদেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়েছে। র‌্যাব ফোর্সের সব ব্যাটালিয়ন সারাদেশে তাদের স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে নিরাপত্তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

২। অগ্রীম পদক্ষেপ হিসেবে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে র‌্যাবের সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

৩। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জন্য র‌্যাব-৩ এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় উল্লিখিত এলাকার অবজারভেশন পোস্ট এবং চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে র‌্যাব অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয়পূর্বক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।

৪। শহীদ মিনারের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে র‌্যাবের বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রয়োজনীয় সুইপিং সম্পন্ন করবে। পাশাপাশি যেকোনও উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য র‌্যাবের স্পেশাল ফোর্স সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে।

৫। বিভিন্ন এলাকা থেকে শহীদ মিনারমুখী রাস্তার মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় তল্লাশির মাধ্যমে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।

৬। শহীদ মিনারসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানস্থলে আগত নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ইভটিজিং বা যে কোনও ধরনের হয়রানি প্রতিরোধে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে র‌্যাব।

৭। ভার্চুয়াল জগতে কোনও ধরনের গুজব, উসকানিমূলক তথ্য, মিথ্যা তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে র‌্যাব সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইনে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রাখছে।

৮। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন মেট্রোপলিটন এলাকা, বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব শহীদ মিনার এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ইনার পেরিমিটার ও শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকাকে ভিডিও সুপারভেইল্যান্সের আওতায় আনতে সিসিটিভি ও আইপি ক্যামেরা এবং মনিটরিং কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

৯। র‍্যাবের ব্যাটালিয়নগুলো নিজ নিজ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তাদের অধিক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। র‌্যাব সদর দফতরে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হবে।

১০। নিষিদ্ধঘোষিত দল ও সংগঠনের সদস্যরা যেন শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে কোনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে র‌্যাব তৎপর রয়েছে।

১১। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।

এছাড়াও এই সময়ে যে কোনও প্রকার বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে জেলা, মেট্রোপলিটন এলাকা, থানাভিত্তিক স্থানীয় র‌্যাবের সহযোগিতা পেতে টহল ইনচার্জ অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত র‌্যাব ব্যাটালিয়ন অধিনায়ককে অবহিত করণসহ র‌্যাবকে জানানোর জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *