রাজধানীর শাহবাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন করা নিয়োগপ্রত্যাশীদের লাঠিপেটা ও জলকামানের পানি নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে তাঁদের ওপর লাঠিপেটা করা হয়। তবে আন্দোলনকারীরা পুলিশের ধাওয়া ও জলকামান উপেক্ষা করেই ফের সড়ক অবরোধ করেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে শাহবাগে অবস্থান নেওয়া সহকারী শিক্ষকদের ধাওয়া দেয়। তাঁদের শাহবাগ মোড়ের মূল সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে লাঠিপেটা ও জলকামান থেকে পানি নিক্ষেপ করা হয়। আন্দোলনকারীরা বলছেন, নিয়োগপত্র না নিয়ে তাঁরা ঘরে ফিরবেন না।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সপ্তম দিনের মতো শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান করছিলেন আন্দোলনকারীরা। বেলা পৌনে ২টার দিকে তাঁরা শাহবাগ মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন। পরে তাঁদের সরিয়ে দিতে জলকামানের পানি নিক্ষেপ করে পুলিশ। তবে পুলিশের ধাওয়া ও জলকামান উপেক্ষা করেই শাহবাগ অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। ফলে শাহবাগ মোড় ও সংযোগ সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এর আগে গত সোমবার দুপুরেও তাঁদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করেছিল পুলিশ। এ সময় কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ শোনা যায়। পুলিশের লাঠিপেটায় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন। এ ছাড়া আটক করা হয় কয়েকজনকে।
এরপর সেদিন সন্ধ্যার দিকে আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন, দাবি আদায় না হলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে লাগাতার অবস্থান করবেন।
উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীরা বলেছেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন চলছে।
২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত পরীক্ষা হয় ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় একই বছরের ২১ এপ্রিল। ১২ জুন সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ৩১ অক্টোবর ফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।
সুপারিশপ্রাপ্ত হননি, এমন ৩০ জন হাইকোর্টে রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম গত ৬ ফেব্রুয়ারি বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট।