পঞ্চদশ সংশোধনী মামলার রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরল

জাতীয়

এক যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সংবিধানের যে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করা হয়েছিল, তার কিছু অংশ বাতিল ঘোষণা করেছে হাই কোর্ট।

এর ফলে দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের যে বিধান আওয়ামী লীগ করেছিল, তা বাতিল হয়ে গেল। তার জায়গায় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরল।

এক রিট মামলার রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেয়।

২০১১ সালে সংবিধানে আনা পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়।

আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।

পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ অগাস্ট রিট আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ ব্যক্তি। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট গত ১৯ অগাস্ট রুল দেয়। পঞ্চদশ সংশোধনী কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

পরে বিএনপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি সংগঠন এবং কয়েকজন ব্যক্তি এ রিট মামলায় পক্ষভুক্ত হয়, তাদের পক্ষে আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেন।

গত ৩০ অক্টোবর শুনানির পর নভেম্বরে ৯ দিন (৬ নভেম্বর, ৭ নভেম্বর, ১০ নভেম্বর, ১৩ নভেম্বর, ১৪ নভেম্বর, ২০ নভেম্বর, ২৫ নভেম্বর, ২৭ ও ২৮ নভেম্বর) এবং ১ ডিসেম্বর ও বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রুলের ওপর শুনানি হয়।

এদিকে পঞ্চদশ সংশোধনীর ১৭টি ধারার বৈধতা নিয়ে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন গত অক্টোবরে একটি রিট আবেদন করেন।

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৯ অক্টোবর হাই কোর্টের একই বেঞ্চ রুল দেয়। রুলে আইনের ওই ধারাগুলো কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। পরে সেই রুলের ওপর শুনানি হয়।

মঙ্গলবার রায়ের দিন রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন।

রিটকারী বদিউল আলমের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল।

জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *