চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা নামল ৮.৭ ডিগ্রিতে

জাতীয়

আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়। তাতে প্রচণ্ড ঠান্ডায় প্রাণ-প্রকৃতিতে নেমে এসেছে স্থবিরতা। আজ শনিবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, চলমান এই শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েক দিন থাকতে পারে।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, চলতি ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই চুয়াডাঙ্গায় শীতের দাপট বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার এক দিনে তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে দাঁড়ায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। পরদিন শুক্রবার ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেই এ জেলায় শুরু হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।

হিমেল হাওয়া আর তীব্র শীতে কষ্টে আছেন এ অঞ্চলের প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাড়ি থেকে বাইরে—কোথাও শীতের কমতি নেই।

সরেজমিন আজ সকালে চুয়াডাঙ্গা শহর ও শহরতলির আশপাশে ঘুরে দেখা যায়, শীতে সাধারণ মানুষের জবুথবু অবস্থা। বিভিন্ন স্থানে শীত নিবারণে আগুন জ্বালিয়ে গরম হওয়ার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে মাঠে কাজ করা কৃষক শ্রেণির এই শীতে চরম দুরবস্থা দেখা দিয়েছে।

শহরতলির কূলচারা গ্রামের কৃষক রজব আলী বলেন, ‘দুই বিঘা ভুট্টা আছে। সকালে মাঠে যাই প্রতিদিন। কিন্তু এই শীতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তারপরও ফসল বাঁচাতে হলে মাঠে যেতে তো হবেই। আজ জমিতে সেচ দেব।’

উপজেলার দিগড়ী গ্রামের কৃষক আতাহার মিয়া বলেন, ‘আমাদের চুয়াডাঙ্গায় তো একটু শীত বেশি। আবার গরমের সময় গরমও বেশি। আমাদের কিছু করার নেই। এভাবেই চলছে। এই দেখো সকালে তোমার চাচি শীতে কষ্ট করে। নামাজ পড়েই রান্না করে। আমিই বা খেয়ে কীভাবে ঘরে থাকি। যাচ্ছি মাঠের দিকে, চার বিঘা শিম ও ১০ কাঠা পালং আছে।’

শহরের মাঝের পাড়ার গৃহিণী সাবিনা খাতুন বলেন, ‘বাড়ির কাজ করাও কষ্টের। সকালে রান্না করতে গিয়ে কতবার পানিতে হাত দিতে হয়, জানা নেই। হাত মনে হচ্ছে বরফ হয়ে যাচ্ছে। শীতে যেন বেশিই কষ্ট হয়।’

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, আজ শনিবার ভোর ৬টায় এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আর একটু কমে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা দেশের জন্য সর্বনিম্ন। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ।

জামিনুর রহমান আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গায় আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাপমাত্রা আরও কমে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর ১৬ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে অব্যাহত থাকতে পারে ঘন কুয়াশা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *