চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে ভৈরব থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
চট্টগ্রাম বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির মেথরপট্টি এলাকার বাসিন্দা চন্দন। বর্তমানে চন্দনকে ভৈরব থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
ভৈরব মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর মামলা হলে প্রধান আসামি চন্দনকে ধরতে চট্টগ্রাম ডিবি (গোয়েন্দা পুলিশ) গত দুই দিন ধরে ভৈরবে অবস্থান করছিল। ডিবি জানতে পারে আসামি চন্দনের শ্বশুরবাড়ি ভৈরব এলাকায়। কিন্তু ডিবি তার খোঁজ পাচ্ছিল না।
ওসি বলেন, বুধবার ডিবি তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে তিনি ভৈরবে অবস্থান করছেন। পরে এ খবর আমাদের জানানো হলে পুলিশ সন্ধ্যার পর থেকে ভৈরব রেলস্টেশনে অবস্থান নেয়। রাত ১১টার দিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁকে রেলস্টেশন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
ওসি আরও বলেন, চন্দন ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে রওনা হয়ে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ভৈরব রেলস্টেশনে নামেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ি ভৈরবের মেথরপট্টিতে। ট্রেন থেকে নেমে তিনি স্টেশনে ঘোরাঘুরি করে পানির ট্যাংকের কাছে চলে যান। শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসে ওই জায়গা থেকে তাকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। ইচ্ছা ছিল রাত গভীর হলে শ্বশুরের বাসায় আশ্রয় নেবেন। এরই মধ্যে আমরা তাঁকে গ্রেপ্তার করি। বর্তমানে থানা হেফাজতে তাঁকে রাখা হয়েছে। গ্রেপ্তারের বিষয়টি চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ চট্টগ্রাম থেকে এলেই তাঁকে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় বিএনপির সাবেক এক নেতার দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করা হয় গত ২৬ নভেম্বর। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। তখন চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দেন। তাঁরা এ সময় প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লাঠিপেটা করে এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হলের গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া তিনটি মামলা নথিভুক্ত করে পুলিশ।