হিমালয়ের দেশ নেপাল থেকে ভারতের গ্রিড ব্যবহার করে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের মধ্য দিয়ে ছয় বছরের প্রতীক্ষার অবসান হল।
শুক্রবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সঞ্চালন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) একজন কর্মকর্তা জানান, দুপুর ১টা থেকে ভেড়ামারা গ্রিড হয়ে ৩৮ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসছে। এটি ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পুরোনো গ্রিড।
পিজিসিবির ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর ১টার আগে ভেড়ামারা গ্রিডে ভারতীয় বিদ্যুতের সঞ্চালন ৯০০ মেগাওয়াটের কিছু বেশি থাকলেও সন্ধ্যা ৭টার দিকে তা ছিল ৯৪৬ মেগাওয়াট। ইতোপূর্বে এ সঞ্চালন লাইনে ৯১৮ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ দেখা যায়নি।
বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নেপালের বিদ্যুৎ আসা শুরু হয়েছে। হয়ত অদূর ভবিষ্যতে আরও বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ আনা সম্ভব হবে।”
নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য বাংলাদেশ আলোচনা শুরু করে ছয় বছর আগে। ২০১৮ সালে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে দুই দেশ। নেপালের ওই জলবিদ্যুৎ ভারতীয় গ্রিড লাইন ব্যবহার করে আনতে হবে বলে এ বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা চলছিল এতদিন।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষের আমলাতান্ত্রিক ধীরগতির কারণে বার বার সেই প্রচেষ্টা হোঁচট খাচ্ছিল।
চলতি বছরের ১১ জুন আওয়ামী লীগ সরকারে থাকার সময় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নেপাল থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। তখন প্রতি ইউনিটের দর ঠিক হয় ৮ টাকা ১৭ পয়সা, যা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে গড় ব্যয়ের চেয়ে কম। বাংলাদেশে এখন প্রতি ইউনিটের উৎপাদন ব্যয় ১১ টাকার বেশি।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর গত অক্টোবরে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হয়। নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি (এনইএ) ও ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ভেপার নিগম লিমিটেডের (এনভিভিএন) সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবি। পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তির আওতায় এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সাত মাস বিদ্যুৎ আসবে। প্রতি বছর আনুমানিক ১৩০ কোটি টাকা হিসাবে এই বিদ্যুৎ কিনতে পাঁচ বছরে খরচ হবে ৬৫০ কোটি টাকা।