নেপালে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। গতকাল সোমবার দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ২০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছে আরও অন্তত ২৯ জন। এতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বন্যায় নেপালের হতাহতের সংখ্যা নিয়ে এটিই সর্বশেষ তথ্য।
টানা কয়েকদিন ধরে চলমান প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের জেরে গত ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে নেপালের বিশাল এলাকাজুড়ে শুরু হয় বন্যা। এই দুর্যোগকে আরও তীব্র করে তুলেছে বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক ভূমিধস। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেপালের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলো।
সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, বন্যা এবং ভূমিধসের জেরে নেপালের বিশাল অঞ্চলজুড়ে মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে, অনেক মহাসড়ক এবং রাস্তার চলাচল ব্যাহত হয়েছে। শত শত বাড়ি ও সেতু চাপা পড়েছে বা ভেসে গেছে এবং শত শত পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার যাত্রী আটকা পড়েছেন।
দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে নেপালে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে এবার। কাঠমান্ডু ও আশপাশের এলাকায় গত শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে কাঠমান্ডুর অনেক এলাকা প্লাবিত হয়। ভূমিধসের কারণে অনেক মহাসড়কে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় গোটা দেশ থেকে কাঠমান্ডু সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কাঠমান্ডুতে কমপক্ষে ৩৭ জন মারা যাওয়ার পাশাপাশি বিশাল ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার বিবৃতিতে জানিয়েছে, উদ্ধারকারী বাহিনীর তৎপরতায় বিভিন্ন বন্যা উপদ্রুত এলাকা থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ২২২ জনকে উদ্ধার করা করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ১৪২ জনকে।
নেপালের পুলিশ, আর্মড পুলিশ ফোর্স এবং সেনাবাহিনী সদস্যরা বন্যার্তদের উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের সহযোগিতা করছেন বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।