খেলাপি ঋণ আদায়ে গতি আনতে নতুন ‘এক্সিট পলিসি’ প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই নীতিমালায় ঋণখেলাপি ও খেলাপি ব্যবসায়ী উভয় গ্রাহকই সুনির্দিষ্ট শর্ত আরোপ করে অবশিষ্ট অর্থ দিয়ে শিল্প ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই সুবিধার জন্য যোগ্যতা অর্জনের জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই ঋণের অর্থের কমপক্ষে ১০ শতাংশ অগ্রিম জমা দিতে হবে। ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একই ধরনের শর্ত যুক্ত করে নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, পুরোপুরি ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত ঋণের গুণগত মানের কোনো পরিবর্তন হবে না এবং প্রস্থান সুবিধা ব্যবহারকারী গ্রাহকরা এই সময়ের মধ্যে নতুন ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন না।
এতে আরও বলা হয়, ‘কোনো ব্যবসায়ী এ সুবিধা নিলে সর্বোচ্চ তিন বছরের মধ্যে পুরো ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এসব গ্রাহক ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন না।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক উল্লেখ করেছে, অনিয়ন্ত্রিত কারণগুলোর কারণে ঋণগ্রহীতাদের ব্যবসা বা প্রকল্পগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এর ফলে ঋণ সংগ্রহ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় এবং ঋণ পরিশোধের জন্য অপর্যাপ্ত নগদ প্রবাহ দেখা দেয়। এতে এই জাতীয় ঋণগুলো খেলাপি হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়, তবে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জোর দেওয়া হয়েছে, প্রকৃত প্রতিকূল আর্থিক পরিস্থিতি ঋণ পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে। তাই এক্সিট মেকানিজমের মাধ্যমে ঋণ আদায় বা সমন্বয়ের সুবিধার্থে একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রয়োজন। কারণ, ব্যাংকগুলো বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করে আসছে।
এ প্রেক্ষাপটে ব্যাংকিং খাতে তারল্য প্রবাহ বজায় রাখা ও খেলাপি ঋণ কমানোর লক্ষ্যে নতুন নীতিমালায় আনা হয়েছে। দুর্বল প্রতিষ্ঠান পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা বা অনিয়ন্ত্রিত কারণে প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে, এমন ক্ষেত্রে প্রতিকূলভাবে শ্রেণিবদ্ধ ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য নিয়মিত ঋণ প্রস্থান সুবিধা দেওয়া যেতে পারে।
এ সুবিধার জন্য আবেদন করতে হলে ঋণগ্রহীতাকে বিদ্যমান ঋণের ন্যূনতম ১০ শতাংশ এককালীন নগদে পরিশোধ করতে হবে। ব্যাংকগুলোকে এসব আবেদন প্রাপ্তির ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।