গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযানের অংশ হিসেবে নির্বিচার বোমাবর্ষণে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ চালানোর যে অভিযোগ দায়ের করেছে, তার স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে নথিপত্র সরবরাহ করছে তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ইস্তান্বুলে গত শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এরদোয়ান বলেন, জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে তার দেশ গাজা উপত্যকায় চালানো ইসরায়েলের হামলার বিভিন্ন নথিপত্র, বিশেষ করে ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আদালতে ইসরায়েল দোষী প্রমাণিত হবে। আমারা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করি।’
দি হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে এই সপ্তাহে দায়ের করা অভিযোগে দক্ষিণ আফ্রিকা বলেছে, ইসরায়েল গাজাবাসীর ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে। ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্যের মন্তব্যের ওপর ভিত্তি করেই মূলত বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার নীতিকে তুলে ধরা হয়েছে অভিযোগে।
ইসরায়েল অবশ্য এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ হিসেবে উল্লেখ করে তা নাকচ করে দিয়েছে। দেশটি বলেছে, দক্ষিণ আফ্রিকা ইহুদি রাষ্ট্রটিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার নীতিতে বিশ্বাসী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের দূত হিসেবে কাজ করছে। ইসরায়েল জানায়, গাজায় সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে নয়, বরং হামাসকে লক্ষ্য করেই হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। তবে বেসামরিক লোকের হতাহতের ঘটনা ঘটছে, কারণ হামাস গাজার সাধারণ মানুষের ভেতর থেকে পরিচালিত হচ্ছে।
গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনি নাগরিক অধ্যুষিত উপত্যকাটিতে এ পর্যন্ত ২৩ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নিরীহ নারী ও শিশু। তবে ইসরায়েল বলেছে, উপকূলীয় উপত্যকাটিতে তারা আট হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।
যুদ্ধ শুরুর পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনেন। এ ঘটনার পর ইসরায়েল তুরস্ক থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয়। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে তুরস্কও ইসরায়েল থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেয়।