লেবাননের রাজধানী বৈরুতের উপকণ্ঠে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সহযোগী হিজবুল্লাহর একটি শক্ত ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে হামাসের উপপ্রধান সালেহ আল-আরুরি নিহত হয়েছেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
পরে লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আল-আরুরির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় আল-আরুরিসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। এই হামলার ফলে প্রায় তিন মাস ধরে চলতে থাকা হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ আরও ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর লেবাননের রাজধানীতে প্রথমবারের মতো চালানো ইসরায়েলি হামলায় এই প্রথম হামাসের কোনো শীর্ষ কর্মকর্তার মৃত্যু হলো। আল-আরুরি ছিলেন হামাসের অন্যতম প্রধান সমরবিদ।
বৈরুতের হামলার বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর কাছে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তারা বিদেশি কোনো গণমাধ্যমে নিজেদের বক্তব্য প্রচার করে না বলে জানানো হয়।
লোবননের উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, আল-আরুরি তার দেহরক্ষীসহ নিহত হয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করে আরেকজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, আর-আরুরিকে লক্ষ্য করে চালানো হামলায় একটি ভবনের দুটি তলা ও একটি গাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়।
হামাস পরে আল-আরুরি মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে তাদের টেলিভিশনে জানায়, তিনি বিশ্বাসঘাতক ইহুদিদের আক্রমণে নিহত হয়েছেন। সংগঠনটির তাদের গণমাধ্যমে আরও জানায়, হামলায় তাদের অপর দুই সদস্যও নিহত হয়েছে।
লেবাননের জাতীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ জানায়, বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে আল-মুশারাফিয়া এলাকায় ফিলিস্তিনি সংগঠনটির এক বৈঠক চলাকালে এই হামলা চালানো হয়।
আল-আরুরিকে অসংখ্য হামলার জন্য প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে আসছিল ইসরায়েল। ২০১৭ সালে তিনি হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়েহর ডেপুটি হিসেবে নির্বাচতি হন। দুই যুগেরও বেশি সময় ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি থাকার পর ২০১০ সালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল বিদেশে নির্বাসিত জীবনযাপনের শর্তে।
ইজ্জাত আল-রিশক নামের হামাসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এই হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল যে তার লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হচ্ছে, তা-ই প্রমাণ করে। পাশাপাশি আল-আরুরির মৃত্যুতে হামাসের সাহসী প্রতিরোধকে থামানো যাবে না বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, গাজায় হামাসের পাশাপাশি ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িত ইসলামিক জিহাদ সংগঠনটিও আল-আরুরি ও তার সহযোদ্ধাদের মৃত্যুতে একই ধরনের বিবৃতি দিয়েছে। তারা জানায়, এই মৃত্যু পুরো অঞ্চলকে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলবে।
অন্যদিকে, আল-আরুরিকে হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে লেবাননকে জড়িত করতে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ করেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।