গত প্রায় ১২ সপ্তাহের যুদ্ধে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অধিকাংশ এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ার পরও থামেনি ইসরায়েলের আগ্রাসন। গতকাল শুক্রবারও (২৯ ডিসেম্বর) গাজায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আর এতে নিজেদের জীবন বাঁচাতে সহায়সম্বলহীন অবস্থায় গাজার দক্ষিণাঞ্চলে পালাচ্ছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক। খবর এএফপির।
এদিকে, যুদ্ধ অবসানে মিসরীয় পরিকল্পনার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করতে হামাসের প্রতিনিধিদল কায়রো পৌঁছেছে। গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর থেকে যে রক্ষক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তার অবসানে ‘তাৎক্ষণিক মানবিক যুদ্ধবিরতি’র জন্য আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
লেবানন, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েল ও ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গুতেরেস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই যুদ্ধ পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ।
গাজার উত্তরাঞ্চলের ব্যাপক এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞের চালানোর পর ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলা এখন পরিচালিত হচ্ছে মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের বেশকিছু জেলায়। আর এই কারণে ভীত-সন্ত্রস্ত লোকজন জীবন বাঁচাতে ছুটে যাচ্ছে আরও দক্ষিণে মিসরীয় সীমান্তের কাছে রাফাহ শহরে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজার ২৪ লাখ অধিবাসীর ৮৫ শতাংশ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। এদের বেশিরভাগ লোকই ক্ষুধার্ত অবস্থায় প্রচণ্ড শীতে অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহ এবং দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর খান ইউনিসে প্রচণ্ড যুদ্ধ চলায় আরও এক লাখ লোক পালিয়ে গেছে জনাকীর্ণ রাফাহ এলাকায়। তবে রাফাহর কিছু কিছু লক্ষ্যবস্তুতেও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ‘গাজায় ফিলিস্তিনি জনসাধারণের ওপর গণহত্যার মতো কার্যকলাপে’র অভিযোগের বিষয়ে শুনানি শুরুর জন্য আবেদন জানিয়েছে।
তবে, দক্ষিণ আফ্রিকার এই অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিওর হায়াত।
গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এ পর্যন্ত ২১ হাজার ৫০৭ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছে যাদের বেশিরভাগই নিরীহ নারী ও শিশু।অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, যুদ্ধে গাজার অভ্যন্তরে তাদের ১৬৮ জন সৈন্য নিহত হয়েছে।