আজ মহানবমী। নবমীর রাতে শেষ হয় উৎসব। নবমী রাতে বিদায়ের ঘণ্টা বাজে মণ্ডপে মণ্ডপে। কারণ পরদিন দেবী দুর্গা ফিরে যাবেন কৈলাসে। দুর্গাপূজার অন্তিম দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয় নবমীকে। পরের দিন কেবল বিসর্জনের পর্ব।
অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে নবমীর পুণ্য তিথিতে বিশ্বে শুভ শক্তির প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন দেবী দুর্গা। নবমী তিথি শুরু হয় সন্ধিপূজা দিয়ে। অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর প্রথম ২৪ মিনিট মিলে মোট ৪৮ মিনিটে পালিত হয়ে থাকে সন্ধিপূজা। মূলত এ সময় করা হয় দেবী চামুণ্ডার পূজা। কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা পালন করা হয় নবমী তিথিতে।
নবমীর সকাল মানে অশুভ শক্তি থেকে মুক্তি। শ্রী রামচন্দ্র দুর্গার শক্তি আর আশীর্বাদ নিয়ে এই দিনে অশুভ রাবণকে বিনাশ করেছিলেন বলে একে অকাল বোধন বলা হয়।মূলত নবমীর দিনই পূজার শেষ হয়। তবে বিজয়া দশমীর দিনেও কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকে। বিজয়া দশমীতে দুর্গা দেবীর দশমী বিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া সধবা নারীরা মত্ত হন সিঁদুর খেলায়। মুখ রঙিন করে হাসিমুখে মাকে বিদায় জানানোর জন্যই সিঁদুর খেলা।
এ ছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিবাহিত নারীদের জন্য সিঁদুর একটি গুরুতপূর্ণ অংশ। তাই মাকে বিসর্জনের আগ পর্যন্ত তারা একে অপরকে সিঁদুর লাগিয়ে মিষ্টিমুখ করেন, নাচগান করেন। যেন সারাটা বছর এমন আনন্দেই কাটে, হৃদয়ে লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়।
স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন নারীরা নিজ কপালে সিঁদুর লাগান। সেই সিঁদুরের কিছু অংশ দিয়ে দেবীর চরণ স্পর্শ করে থাকেন। তারপর সবাই মিলে একে অপরকে সিঁদুর মাখেন। দুর্গা আগামী বছর আবার সঙ্গে করে শাঁখা সিঁদুর সঙ্গে নিয়ে আসবেন।
সেই শাঁখা সিঁদুরেস্বামীর মঙ্গল হবে এই বিশ্বাসে সিঁদুর নিয়ে দশমী উদযাপন করেন। এই সিঁদুর খেলা বিবাহিত নারীর জন্য সীমাবদ্ধ। তবে সবাই মণ্ডপে নেচে-গেয়ে এতে অংশ নেন। অবিবাহিতরা গালে আর হাতে মাখেন সিঁদুর। আর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় শারদীয় দুর্গোৎসব।