আমার আর কিছু বলার নেই, এটা আইনি বিষয় : ড. ইউনূস

বাংলাদেশ

অর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমি কোনো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত কেন হবো, এটা লিগ্যাল বিষয়। আজ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৩৭ মিনিট থেকে ১০টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত তাকে সংস্থাটির পরিচালক বেনজির আহমেদের নেতৃত্ব একটি টিম জিজ্ঞাসাবাদ করে।

দুদকের গেটে সাংবাদিকদের ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাকে ডেকেছে তাই এসেছি। অভিযোগের বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এটা আইনি বিষয়, আমার আইনজীবী বলবেন।’

দুদকের পক্ষ থেকে তার কাছে কী জানতে চাওয়া হয়েছে- সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমার কোনো মন্তব্য নেই। তবে, আপনারা কষ্ট করে এসেছেন, সেজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।’

দুদক কেন ডেকেছিল বা কী কথা হয়েছে, সে বিষয়ে তার আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, গ্রামীণ টেলিকমের ১০৬ কর্মচারী শ্রম আদালতে মামলা করেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছে, কেন তাদের নীট মুনাফার পাঁচ শতাংশের অংশ দেওয়া হবে না। এ নিয়ে ট্রেড ইউনিয়নও মামলা করেছিল। ট্রেড ইউনিয়ন শ্রম আদালতে গোপন করে হাইকোর্টে এসে একটি মামলা করল যে, টেলিকমকে অবসায়ন এবং লিকুইডিটর দেওয়ার জন্য।

আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য ছিল এমন, গ্রামীন টেলিকম সামাজিক ব্যবসার একটি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি ও শিল্প-কলকারখানা গড়ে তোলে বেকারত্ব দূর করা। এটাই স্যারের (ড. ইউনূস) থিওরি অনুযায়ী মূল্য উদ্দেশ্য। এতে বলা আছে, কেউ কোনো মুনাফা নেবে না, এই মুনাফা সমাজের উন্নয়নের জন্য ধারাবাহিকভাবে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে এবং বেকারত্ব দূর করা হবে।’

আইনজীবী আরও বলেন, ‘সারা পৃথিবী তার (ড. ইউনূস) এই উদাহরণ গ্রহণ করেছে, আমেরিকাসহ পুরো ইউরোপ। কোম্পানি আইনের ২৮ ধারায় রয়েছে, যারা সমাজের কল্যাণের জন্য কাজ করবে, সেটির মুনাফা দেওয়া নিষিদ্ধ। এ কারণে গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনের এই ধারায় একটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। এর মুনাফা দেওয়া নিষিদ্ধ। এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি আইনে। আর লেবার কোর্টের দায়িত্ব হচ্ছে, এই কোম্পানিতে যেসব শ্রমিকরা কাজ করবেন তাদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা দেখভাল করা।’

এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের সই করা একটি চিঠি দিয়ে অর্থপাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনকে তলব করে দুদক।

মামলার আসামিরা হলেন—গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।

এ ছাড়া অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *