ডেঙ্গু টিকার দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালেও মিলেছে উল্লেখযোগ্য সাড়া

বাংলাদেশ

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের তালিকা দিনদিন বেড়েই চলেছে, দীর্ঘ হচ্ছে মৃতের সারি। শঙ্কার মধ্যে কাটছে মানুষের দিন। যদিও পরিত্রাণে থেমে নেই গবেষকরা। এরই মধ্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধে টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায়ও মিলেছে ‘উল্লেখযোগ্য সাড়া’। এমনটাই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ সোমবার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে (নিপসম) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেছেন, দেশে ডেঙ্গু রোগের ভ্যাকসিন ‘টিবি-০০৫’-এর দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি। এ ছাড়া, দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে টিকার কার্যকরিতার উল্লেখযোগ্য সাড়া মিলেছে। এছাড়া, টিকার তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে জানা যায়, কমবয়সী ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এই ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং রোগ প্রতিরোধে কার্যকর। ভবিষ্যতে এই টিকা প্রদানে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল প্রয়োজন। আর এজন্য প্রয়োজন আর্থিক সহযোগিতা ও সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে যে টিকা আনার চেষ্টা হচ্ছে, তা এখনও ট্রায়াল অবস্থায় আছে। আইসিডিডিআরি,বি একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এর আগে কলেরা টিকা আবিষ্কারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই ডেঙ্গু ভ্যাকসিন নিয়ে তারা যে সহযোগিতা চাইবে, তা আমরা করব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো চাই না একজন মানুষও এই রোগে মারা যাক। আমরা সাত লাখের মতো স্যালাইন আমদানি করছি। এর মধ্যে তিন লাখ স্যালাইন চলে এসেছে। দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে। আমাদের বর্তমান যে চাহিদা, তাতে ৩০ থেকে ৪০ লাখ ব্যাগ প্রয়োজন। তবুও আমরা নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে স্যালাইন আমদানি করছি। এছাড়া কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আমদানি করতে চাইলেও করতে পারবে।’

জাহিদ মালেক বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে এখন ৭০ হাজারের অধিক শয্যা, যা আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে ৪০ হাজারও ছিল না। শুধু শয্যাই বাড়াইনি, অক্সিজেন সাপ্লাইসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। যে কারণে সরকারি চিকিৎসাসেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা এসেছে এবং তারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে। আমরা চিকিৎসক সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে মেডিকেল কলেজগুলোতে সিট সংখ্যা বাড়িয়েছে। বর্তমানে মেডিকেল কলেজে সিট আছে পাঁচ হাজারের অধিক, যা পূর্বে ছিল তিন হাজারের মতো। পাঁচটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ৩৭টি মেডিকেল কলেজ করেছি।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে রোগবালাইয়ের পরিমাণ বেড়েছে। যে কারণে দ্বিগুণ-তিনগুণ শয্যা বাড়িয়েও হাসপাতালে জায়গা হচ্ছে না। রোগীদের ফ্লোরে থাকতে হয়। হাসপাতালে জায়গা না হওয়ার অন্যতম কারণ হলো হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ারও প্রবণতা বেড়েছে। অনেকে বলে সরকারি হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা হয় না, এটা ভুল কথা। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা বিশ্বমানের।’ তিনি বলেন,  নতুন করে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসক-নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিদেশিরাও আমাদের দেশে চিকিৎসা নিতে আসছে এবং তারা আমাদের প্রশংসা করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *