ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়াই যেভাবে বিমানে উঠেছিল শিশুটি

বাংলাদেশ

পরিচয় মিলেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়া কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে উঠে পড়া শিশুটির। তার নাম জুনায়েদ হোসেন মোল্লা। বয়স ১২ বছর। বাড়ি গোপালগঞ্জে। সে স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়ে।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে বিমানবন্দর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

গত ১২ সেপ্টেম্বর জুনায়েদ হোসেন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে ঢাকার বসুন্ধরায় তার ফুফুর বাসায় একাই চলে আসে। প্রথমে সে বাসে করে গাজীপুর যায়। এরপর সেখান থেকে বিআরটিসির একটি বাসে বিমানবন্দর ঘুরতে চলে আসে।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা গেছে শিশুটি বিমানবন্দরে বিভিন্ন যাত্রীর গা-ঘেঁষে অবস্থান করছিল, যাতে মনে হচ্ছিল সে তাদের একজন। এভাবে সে বিমানবন্দরের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে হজযাত্রীদের একটি গ্রুপের সঙ্গে থেকে সে ফ্লাইটে উঠে পড়ে।

এ বিষয়ে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জুনায়েদ হোসেন মোল্লা নামের ওই ছেলেটির বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর এলাকায়। তার বয়স ১২ বছর। সে স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়ে। মুকসুদপুর থেকে সে একাই ঢাকা চলে আসে। প্রথমে গাজীপুর যায়। পরে সেখানে থেকে বিআরটিসি বাসে করে ঢাকা বিমানবন্দর দেখতে আসে। সেখানে এসে একা ঘুরতে থাকে। একসময় কোনও বাধা ছাড়াই বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকে পড়ে। সে মূলত রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় তার ফুফুর বাসায় বেড়াতে এসেছিল। ঢাকায় এসে ফুফুর বাসায় না গিয়ে সরাসরি বিমানবন্দর দেখতে চলে যায়।

তিনি বলেন, বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশের সময় তাকে কেউ আটকায়নি এবং কারও চোখে পড়েনি। তাকে না আটকানো বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীন কাজ। থানায় নিয়ে আসার পর শিশুটির কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে তাকে ছেড়ে দিয়েছি।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, রাত ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের কেইউ-২৮৪ ফ্লাইটটি উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঠিক ওই সময়ই একটি শিশুকে বিমানের করিডরে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা যায়। পরে বিমানের কেবিন ক্রু তাকে সিটে বসার পরামর্শ দেয়। শিশুটি তখন সিটে বসে পড়ে।

পরে জানা গেছে, শিশুটির ভিসা-পাসপোর্ট কিংবা বোর্ডিং পাস কিছুই তার সঙ্গে নেই। এমনকি শিশুটি ওই বিমানের যাত্রীও নয়। একপর্যায়ে কেবিন ক্রুরা হেড কাউন্ট (যাত্রীসংখ্যা গণনা করা) করলে একজন যাত্রী বেশি পাওয়া যায়। পরে প্লেনের শিশুটিকে বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে, শিশুটি সঠিক উত্তর দিতে না পারায় তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করে এভসেক।

এ ঘটনায় বিমানবন্দরের ১০ জন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার এবং কুয়েত এয়ারওয়েজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *