ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত লিবিয়া। দেশটির ডেরনা শহরে বন্যায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে পাঁচ হাজার ৩০০ জনে দাঁড়িয়েছে। সেইসঙ্গে নিখোঁজ রয়েছে হাজার হাজার জন। দেশটির স্থানীয় মন্ত্রীর বরাত দিয়ে আজ বুধবার বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে প্রাণহানির সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে বলে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় মন্ত্রীর পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুনামির মতো বন্যায় সাগরে ভেসে যাওয়া মানুষকে উদ্ধার করতে রীতিমত লড়াই করতে হচ্ছে দেশটির উদ্ধারকারী দলগুলোকে।ডেরনা শহরের দুইটি বাঁধ ও চারটি সেতু ধসে গেছে এবং এর ফলে গত রোববার ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলে ভেসে গেছে শহরের বড় একটি অংশ। রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রায় ১০ হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ আছে এবং মৃত্যুর সংখ্যাও আরও বাড়তে পারে।
ইতিমধ্যে সেখানে অল্প মাত্রায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে। এতে যোগ দিয়েছে মিশরও। তবে লিবিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এ তৎপরতা কিছু বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেশটি এখন দুটি সরকারের নিয়ন্ত্রণে বিভক্ত হয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইরান, ইতালি, কাতার এবং তুরস্কসহ কিছু দেশ জানিয়েছে প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে তারাও প্রস্তুত আছে। লিবিয়ায় রোববার অন্ধকারের মধ্যেই করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, শহরের রাস্তায় বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে বহু গাড়ি।
অনেক মানুষের সাগরের পানিতে ভেসে যাওয়ার কষ্টকর ঘটনার পাশাপাশি অনেকে আবার নিজেকে রক্ষার জন্য অবস্থান নিয়েছেন নিজ নিজ বাসা বাড়ির ছাদে।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে নিয়ন্ত্রিত সরকারের হয়ে বলছিলেন হিশাম চোকিওয়াত, যা দেখেছি তাতে আমি হতবাক। এটা ছিল সুনামির মতো।
বিবিসিকে তিনি জানিয়েছেন, ডেরনা শহরের দক্ষিণে একটি বাঁধ ধসে যাওয়ায় শহরের বড় অংশ সাগরের পানিতে তলিয়ে গেছে।
আলি দেবিয়াহ নামে একজন বলেন, মৃতদেহ উদ্ধারেও হিমশিম খেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। তবে নৌবাহিনী ও ডুবরিরা সাগর থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
বায়দা শহরের সাহায্যকর্মী কাসিম আল কাতানি বিবিসিকে বলেছেন, শহরের প্রধান সড়কগুলো ব্যাপক ক্ষতির শিকার হওয়ায় উদ্ধারকারীদের ডেরনা শহরে পৌঁছানোটাই কঠিন ছিল।
তবে, কেন বন্যায় এমন ভয়াবহ বিপর্যয় হলো তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। তিনি বলেছেন, প্রায় আড়াই বিলিয়ন লিবিয়ান দিনার (৫১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ডেরনা এবং পূর্বাঞ্চলীয় শহর বেনগাজীতে বাঁধ পুনর্নির্মাণের জন্য দেওয়া হবে। সৌশা, আল মারজ এবং মিসরাতা শহরও রোববারের ঝড়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।