এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেলেন লিটন, ফিরলেন বিজয়

খেলাধুলা

বাংলায় একটা বহুল প্রচলিত প্রবাদ ‘কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ।’ দেশের ক্রিকেটের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রবাদটির সঙ্গে মিল রেখে যদি বলি ‘বিজয়ের পৌষ মাস, লিটনের সর্বনাশ’, তবে সেটি ভুল হবে না।

এশিয়া কাপের ঠিক আগমুহূর্তে জ্বর হওয়ায় টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছেন জাতীয় দলের উইকেট-রক্ষক ব্যাটার লিটন কুমার দাস। বাংলাদেশের এশিয়া কাপের মিশন শুরুর আগের দিন তাকে ছিটকে যেতে হয়েছে।ডানহাতি এই টপ-অর্ডার ব্যাটারের ছিটকে যাওয়াতে কপাল খুলেছে আরেক উইকেটরক্ষক টপ-অর্ডার ব্যাটার এনামুল হক বিজয়ের। লিটনের বিকল্প হিসেবে তাকে শ্রীলঙ্কায় উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

এশিয়া কাপের দলে বিজয়ের অন্তর্ভুক্তিটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত বিষয়। কেননা, এশিয়া কাপের আগে থেকে ক্রিকেটারদের নিয়ে চলা আলোচনায় একবারের জন্যও শোনা যায়নি তার নাম।

শুধু তাই নয়, এশিয়া কাপের পুলে ডাক পাওয়া ৩২ ক্রিকেটারের ভেতর ছিলেন না বিজয়। তার অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যায়নি এশিয়া কাপের কন্ডিশনিং ক্যাম্পে। এমনকি বাংলাদেশ ইমার্জিং দলেও জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন এই টপ-অর্ডার ব্যাটার।

বিজয়ের উপস্থিতি ছিল কেবলমাত্র বাংলাদেশ টাইগার্সে। সেখান থেকে হুট করেই যেন অজানা কোনো শক্তির প্রভাবে এশিয়া কাপের দলে জায়গা মিলেছে তার।

বোর্ডের দাবি, লিটন ছিটকে যাওয়ায় টিম ম্যানেজমেন্ট এমন একজনকে খুঁজছিল; যিনি কিনা টপ-অর্ডারে ব্যাটিং করেন পাশাপাশি উইকেট-রক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম। সেই দিক বিবেচনা করে লিটনের পারফেক্ট রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে বিজয় ছাড়া আর কাউকে খুঁজে পাননি নির্বাচকেরা।

আর সে কারণেই এশিয়া কাপের মিশনে যুক্ত করা হয়েছে বিজয়কে। জাতীয় দলের নির্বাচকদের ভাষ্যই এটি

ধরেই নেওয়া যাক, নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত শতভাগ সঠিক। কিন্তু তারপরও প্রশ্ন থেকেই যায়।

এশিয়া কাপের মিশনে ৪ ওপেনার নিয়ে দল সাজিয়েছিলেন নির্বাচকেরা। লিটন দাস, নাঈম শেখ, তানজিদ তামিম ও জাকির হাসান। এর ভেতর ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি উইকেট সামলানোর দায়িত্বটাও পালন করতে পারতেন লিটন ও জাকির।

লিটনের বদলি হিসেবে বিজয়কে অন্তর্ভুক্ত করার সময় হয়তো জাকিরের কথা ভুলেই গিয়েছিলেন নির্বাচকেরা। যে কারণে বিজয় ছাড়া আর কাউকে চোখে পড়েনি তাদের।

উইকেটরক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার বিষয়টি বাদ দিলে দলের সঙ্গে অনুশীলন করা সৌম্য সরকারও হতে পারতেন লিটনের রিপ্লেসমেন্ট। কেননা, তারও অভিজ্ঞতা রয়েছে ওপেনিং করার। সৌম্য আর বিজয়ের সাম্প্রতিক সময়কার পারফরম্যান্স এক পাল্লায় মাপা হলেও ভারী অংশটা থাকবে সৌম্যের কোর্টে।

হয়তো বিজয়কে নেওয়া হয়েছে, দলের কম্বিনেশনের কথা চিন্তা করেই। কিন্তু দলে নেওয়ার কারণ হিসেবে প্রধান নির্বাচকের দাঁড় করানো খোঁড়া যুক্তি জন্ম দিয়েছে অনেক প্রশ্নের। জন্ম দিয়েছে সমালোচনার।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর ভাষ্য, বিজয় ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ধারাতেই ছিল। বাংলাদেশ টাইগার্সের প্রোগ্রামে ওকে (বিজয়) আমরা নজরে রাখি। সে সবসময়ই আমাদের পরিকল্পনাতেই ছিল।

তিনি আরও যোগ করেন, লিটনের ছিটকে যাওয়ার আমাদের একজন টপ-অর্ডার ব্যাটারের প্রয়োজন ছিল, যে কিনা উইকেট আগলে ধরে খেলতে পারবে। সে জন্যই বিজয়কে নেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *