কক্সবাজার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে জামিন না হওয়া নয় আসামিকে একই দিনে আইন ভঙ্গ করে জামিন দেয়ায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলকে হাইকোর্টে তলব করা হয়। তার দেয়া
একটি জামিন আদেশে কাটাকুটি করার ঘটনাকে ‘অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন হাইকোর্টের একজন বিচারক।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো: হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির সময় বিচারকের এ মন্তব্য আসে।
জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈল দ্বিতীয় দিনের মত আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বুধবার আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন জমা দিয়েছেন। আজ শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।তার ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিষয়টি ২৭ জুলাই আদেশের জন্য রেখেছে হাইকোর্ট।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজের পক্ষে দ্বিতীয় দিনও শুনানি করেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল। অপরপক্ষে ছিলেন এ বি এম আলতাফ হোসেন ও এস এম আমজাদুল হক।সাঈদ আহমেদ রাজা সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোহাম্মদ ইসমাঈল নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তবে এতে কিছু অসঙ্গতি থাকায় তা সংশোধন করে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৭ জুলাই দিন রাখা হয়েছে।’আইনজীবী আলতাফ হোসেন বলেন, কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈল তার আদেশে একটি অংশে কাটাকাটি করেছেন। বিষয়টিকে আদালত অপরাধ (ক্রাইম) হিসেবে বর্ণনা করেছে।
“আদেশের এক জায়গায় ছিল, আসামিদের দীর্ঘ হাজতবাস বিবেচনায় নিয়ে জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। কিন্তু পরে এই লাইন থেকে ‘দীর্ঘ হাজতবাস’ অংশটি কেটে দেয়া হয়।”
শুনানির এক পর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, ‘আমি তো উনাকে অনুতপ্ত দেখি না।’
তখন মোহাম্মদ ইসমাঈল ‘ভুল হয়েছে’ বললে আদালত বলেন, ‘এটা ভুল না, এটা ক্রাইম। আপনি টেম্পারিং করেছেন।’
জমি দখল নিয়ে বিরোধের জেরে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভয়ভীতি দেখানো ও আইনশৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে মিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ ভুট্টোসহ নয়জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান খোদেস্তা বেগম রিনা।গত ১১ এপ্রিল ওই মামলায় আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন চাইলে তাদের ছয় সপ্তাহের জামিন দিয়ে কক্সবাজারের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
এরপর গত ২১ মে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে বিচারিক হাকিম আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে আসামিদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। কিন্তু একইদিন আসামিরা কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন এবং তাদের আবেদন মঞ্জুর হয়।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন চেয়ারম্যান রিনা। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও দায়রা জজকে তলব করে হাইকোর্ট।