হলিউডের সিনেমা জগতে বহুল কাঙ্ক্ষিত এবং জনপ্রিয় একটি নাম ‘মিশন: ইম্পসিবল’। দুনিয়া মাতানো এই ফ্রাঞ্চাইজির সিনেমা মানেই দুর্নিবার আকর্ষণ। এরইমধ্যে ভক্তরা নিশ্চয়ই জেনে গেছেন নতুন সিনেমার খবর। ট্রেলার প্রকাশের পর যে আলোড়ন তৈরি হয়েছে তাতে আর বোঝার বাকি নেই কি ঘটতে যাচ্ছে। এবারের ছবির নাম ‘মিশন: ইম্পসিবল- ডেড রেকনিং পার্ট ১।’
আন্তর্জাতিক মুক্তির দুই দিন পর শুক্রবার (১৪ জুলাই) বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ছবিটি। ফ্রাঞ্চাইজির সপ্তম এই কিস্তিকে বলা হচ্ছে সবচাইতে আকর্ষণীয় ছবি। ট্রেলার প্রকাশের পর এর হাইপ রীতিমত তুঙ্গে। আর মিশন: ইম্পসিবল-এর জনপ্রিয়তার সঙ্গে যে নামটি অবিচ্ছেদ্য তার কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই ফ্রাঞ্চাইজির প্রাণপুরুষ তিনি। নতুন ছবির মধ্য দিয়ে আরো একবার পর্দায় এজেন্ট ইথান হান্টের ভূমিকায় দেখা যাবে সেই সুপারস্টার টম ক্রুজকে। ক্রিস্টোফার ম্যাককুয়ারি পরিচালিত এই সিনেমায় আরো আছেন হেইলি অ্যাটওয়েল, ভিং রাহমেস, সাইমন পেগ, রেবেকা ফারগুসন প্রমুখ।
ফ্রাঞ্চাইজির আগের ছবিগুলোর মতো এই ছবিতেও ধুন্ধুমার অ্যাকশন দৃশ্য এবং টম ক্রুজের অবিশ্বাস্য সব স্টান্ট রয়েছে। ৬০ বছর বয়সী অভিনেতা টম ক্রুজ প্রায় সমস্ত স্টান্ট ডামির সাহায্য ছাড়া নিজেই করেছেন। এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত সিনেমাটির শুটিংয়ের দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে, যা ছবির প্রতি ভক্তদের কৌতূহল বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৯ সালে সিনেমাটির শুটিং প্রথম শুরু হয়।
এরপর করোনার ফলে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে সিনেমার শুটিং। এ ছাড়াও ২০২০ সালে এই সিনেমার একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়ে যায় যেখানে টম ক্রুজ ও সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত কোনো এক কর্মীর বাগবিতন্ডা প্রকাশ্যে চলে আসে। এবারের গল্পটি দুই অংশে সাজানো হয়েছে। এবার মুক্তি পাচ্ছে প্রথম অংশ। বাকি গল্প ‘মিশন: ইম্পসিবল ডেড রেকনিং পার্ট টু’ নামে মুক্তি পাবে ২০২৪ সালে।
টম ক্রুজের ছবিতে সবসময় কিছু না কিছু নতুনত্ব থাকে। শুধু ভয়ংকর স্ট্যান্ট নয়, যে কোনো দৃশ্য নিখুঁত করতে এ অভিনেতা যথেষ্ট সময় নেন। সিনেমার সাফল্যের পেছনে এই নায়কের অবদানকে ভীষণভাবে স্বীকার করেন তার সহকর্মীরা। এই যেমন ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’ তারকা জে এলিস বলছিলেন, টম ক্রুজ প্রতিদিন মনে করিয়ে দিতেন তারা সবাই মিলে নতুন কিছু করতে চলেছেন। নিজের ট্রেডমার্ক অবিশ্বাস্য সব অ্যাকশন দৃশ্যের জন্য দর্শকনন্দিত এই অভিনেতা। নতুন এই সিনেমাতেও এমনভাবেই তাকে দেখতে পারবেন চলচ্চিত্রপ্রেমীরা।এর আগেও খালি হাতে পর্বত বেয়ে, উড়ন্ত বিমান থেকে লাফিয়ে পড়ে এবং বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফা থেকে খালি হাতে নেমে দর্শকদের চমকে দিয়েছেন তিনি। নিজের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে ১০০ বারেরও বেশি সময় বিমানে ২৫ হাজার ফুট উপর থেকে লাফিয়ে পড়েছেন তিনি। এ ছবিতেও বেশ কিছু বিপজ্জনক স্টান্ট করেছেন। পাহাড়ের উপর থেকে তাকে লাফিয়ে পড়তে দেখবেন দর্শকরা। ট্রেলারে একটি চলমান ট্রেনের উপরে দৌড়াতে দেখা যায় তাকে। এ ছাড়া খাড়া পাহাড়ের মধ্যে তিনি মোটরসাইকেল চালাবেন। ছবির বক্স অফিস সাফল্য নিয়ে বাণিজ্য বিশ্লেষকদের অনুমান, এবারের কিস্তিটি পেতে যাচ্ছে সেরা ওপেনিং।
হলিউড রিপোর্টার বলছে, প্রথম সপ্তাহান্তে এ ছবির আয় দাঁড়াবে ৯ কোটি ডলার। টম ক্রুজের সর্বশেষ আকর্ষণ ছিল ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’। ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবির বিশ্বব্যাপী আয় ছিল ১৫০ কোটি ডলারের বেশি। কোভিড পরবর্তী অধ্যায়ে যা ছিল বিস্ময়কর। এখন বলা হচ্ছে, ‘ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’ সিরিজের আগের ছবিগুলোর আয়ের রেকর্ড ভাঙবে। ২০১৮ সালে ‘মিশন: ইম্পসিবল ফলআউট’ সপ্তাহান্তে আয় করে ৬ কোটি ১২ লাখ ডলার। এর পরেই আছে ২০০০ সালের ‘মিশন: ইম্পসিবল টু’, ৫ কোটি ৭৮ লাখ ডলার।