২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৭২ বিলিয়ন ডলার : বাণিজ্যমন্ত্রী

২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৭২ বিলিয়ন ডলার : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশ

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানির আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে সরকার। যার মধ্যে পণ্য খাতে ৬২ বিলিয়ন এবং সেবা খাতে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের এমনটাই জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

মন্ত্রী বলেন, পণ্য ও সেবা মিলিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৫৫.৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এবার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা গতবছরের চেয়ে ১১.৫৯ শতাংশ বাড়িয়ে ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জন করা সম্ভব এবং আমাদের এই বক্তব্যের সাথে ব্যবসায়ীরা একমত পোষণ করেছেন। রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। আমরা তাদের কথা শুনেছি এবং তাদের দাবি পূরণে সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

বিগত দুই অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা এবং লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জনের হারসহ পণ্য ও সেবা খাতের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক অর্থবছরে রপ্তানি খাতে অর্জিত প্রবৃদ্ধির গতিধারা, পণ্য ও বাজার সম্প্রসারণ ও বহুমুখীকরণে সরকার গৃহীত আর্থিক ও অ-আর্থিক প্রণোদনা, বিশ্ব বাণিজ্যের সাম্প্রতিক গতিধারা, দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব এবং রপ্তানি সম্ভাবনাময় নতুন পণ্য ও সেবা খাতের বিকাশ বিবেচনায় নিয়ে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন তার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সংবিধান অনুযায়ী হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে কোনো কিছুই বন্ধ থাকবে না। অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবেই চলবে। অতএব নির্বাচনের বছর উপলক্ষ্যে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো বিরুপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই।

টিপু মুনশি জানান, ২০২৩ সালের শেষ পর্যায়ে দক্ষিণ এশিয়ার বেশীরভাগ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ঘটবে বলে বিভিন্ন সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে। এই পূর্বাভাস ঠিক থাকলে এসময়ে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৮%। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বাণিজ্য সংস্থা থেকে এখন পর্যন্ত যেসব পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে তা বিবেচনায় নিলে চলতি বছরের মন্দা অবস্থা বছরের শেষ দিকে কাটতে শুরু করবে এবং আগামী বছরে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরায় প্রবৃদ্ধির ধারায় ফেরত আসবে।

বিগত অর্থবছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য খাতে ৫৮.০০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৫৫.৫৬ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়েছে যা, লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৫.৮% এবং পূর্ববর্তী ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ৬.৬% বেশী। পণ্য ও সেবা খাত মিলে ৬৭.০০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৬৪.৫৫ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়েছে যা, লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৬.৩% এবং পূর্ববর্তী ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ৫.৮% বেশী।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সঞ্চালনায় সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রতিনিধি এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *