বিশ্ব ক্রিকেটের দুই পরাশক্তি ভারত-পাকিস্তান। এই দুই দেশের খেলা মানে ক্রিকেটে অন্যরকম উত্তেজনা। বিশ্বের যে প্রান্তে হউক না খেলা সেই খেলা দেখার জন্য কোটি কোটি দর্শক মাঠে ও টিভি সেটের সামনে বসে যাবেন। আর এতে বিজ্ঞাপনি সংস্থাগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ে। যাতে লাভ হয় ক্রিকেটের। দুই বোর্ড মোটা অংকের অর্থ পায়। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে দুই দেশের ক্রিকেট খেলা দেখা কমই হয় সমর্থকদের। তবে আইসিসির ইভেন্টগুলোতে দুই দল মুখোমুখি হয়। এর বাইরে আর কোনো সুযোগ নেই। তবে এশিয়া কাপেও মাঝে মধ্যে দেখা মিলে। তবে এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে জটিল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তান এখনো ঘোষণা দেয়নি তারা ভারতে খেলবে যাবে কিনা। আর এতে চিন্তায় ভারত ও আইসিসি।
ভারতে খেলতে আসার বিষয়ে পিসিবির প্রাথমিক সম্মতি পেয়েই আইসিসি আসন্ন ওয়ান ডে বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা করে দেয়। স্থির হয় ১৫ অক্টোবর আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের ভারত-পাকিস্তান মহারণ। যদিও পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ড পরে জানায় যে- বাবরদের ভারতে খেলতে যাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে পাকিস্তান সরকারের সম্মতির উপরে।
পাকিস্তান সরকার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও গড়েছে। এখন নতুন করে জটিলতা তৈরি হয় সেই কমিটির অন্যতম সদস্য তথা পাকিস্তানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্রীড়ামন্ত্রী এহসান মাজারির কথায়। ক্রীড়ামন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে- ভারত যদি এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তানে না যায়, তবে পাকিস্তান দলকে বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে পাঠানো হবে না। অর্থাৎ, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের উপর চাপ তৈরি করতে প্রাথমিকভাবে যে কৌশল নিয়েছিল, সেই একই সুর শোনা যাচ্ছে পাক ক্রীড়ামন্ত্রীর গলায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাথে আলোচনার সময় মাজারি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘যেহেতু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে, তাই আমার ব্যক্তিগত মত এই যে- ভারত যদি এশিয়া কাপ খেলার জন্য নিরপেক্ষ কেন্দ্রের দাবি জানিয়ে থাকে, তবে বিশ্বকাপ খেলার জন্য আমাদেরও তাই করা উচিত।’
পাকিস্তানের বিশ্বকাপে অংশ নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী যে কমিটি গড়েছেন, সেই সম্পর্কে আপডেট দিয়ে মাজারি বলেন, ‘কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। আমি কমিটির বাকি ১১ সদস্যের একজন। আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করব এবং প্রধানমন্ত্রীকে নিজেদের মতামত জানাব। প্রধানমন্ত্রী নিজে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পেট্রন ইন চিফ। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রীই।’
মাজারি জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের যেকোনো সময়ে কমিটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট জমা দিতে পারে। তার পরেই জাকা আফরাশ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের হয়ে আইসিসির সভায় যোগ দেবেন। বিসিসিআই সচিব জয় শাহ, যিনি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান, তিনিও উপস্থিত থাকবেন ডারবানের সভায়। সেখানে জয় শাহর সাথে এশিয়া কাপ নিয়েও পিসিবি প্রতিনিধির আলোচনা হবে হবে জানা যাচ্ছে।
বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা করা হলেও এখনো এশিয়া কাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি ঘোষিত হয়নি। তবে এটা স্থির করা হয়েছে যে- এশিয়া কাপ আয়োজিত হবে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায়। টুর্নামেন্টের বেশিরভাগ ম্যাচ খেলা হবে দ্বীপরাষ্ট্রে। স্বাভাবিকভাবেই ভারত তাদের ম্যাচগুলো খেলবে শ্রীলঙ্কায়।