এবার বর্ষা আসার আগে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়াতে থাকার মধ্যেই এই রোগের জীবাণুবাহী এইডসি মশা নিয়ন্ত্রণে ঘাটতি থাকার কথা বলেছেন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরাটন হোটেলে এক সেমিনারে তিনি বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশন এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
“আমরা চাই তারা আরও বেশি করে কাজ করুক, যাতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসে। যে পর্যন্ত রোগী বাড়তে থাকবে সে সময় পর্যন্ত আমরা ভাবব ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসে নাই। এখনো কাজের জায়গা রয়ে গেছে, গ্যাপ রয়ে গেছে। যেখানে স্প্রে করা হয় নাই, এখনো বেশি (মশা) আছে তা কমানো দরকার।”
এবার বর্ষা শুরুর আগে থেকেই সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বুধবার পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৮০২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলেন। ডেঙ্গুতে এ বছর মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের।বুধবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০১ জন ডেঙ্গু রোগী। বুধবার হাসপাতালে ভর্তি রোগী ছিলেন ৮০৬ জন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেন, ঢাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এজন্য ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে।“তারা নিজেদের বাড়িঘর পরিষ্কার রাখবে, ড্রেনগুলো পরিষ্কার রাখবে। তাহলে এই ডেঙ্গু বলেন আর ম্যালেরিয়া বলেন, নিয়ন্ত্রণে আসবে।”
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ১৩ জেলার ৭২ উপজেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে । রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান – এই তিন পার্বত্য জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি।তবে ২০০৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু কমেছে। ২০০৮ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ম্যালেরিয়াজনিত অসুস্থতা শতকরা ৭৯ ভাগ এবং মৃত্যু শতকরা ৯১ ভাগ কমেছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশ মোট ম্যালেরিয়া রোগী ছিল ১৮,১৯৫ জন ও মারা গেছেন ১৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবীর, বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা প্রমুখ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।