২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের আসর যৌথভাবে আয়োজন করছে উত্তর আমেরিকার তিন দেশ -কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো। গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের সে আসরের লোগো উন্মোচন করেছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
বুধবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় লস অ্যাঞ্জেলসে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হয়েছে ২০২৬ বিশ্বকাপের লোগো। লোগো উন্মোচন করেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কিংবদন্তি ‘এল ফেনোমেনন’ রোনাল্ডো নাজারিও।
২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে বদলে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপের চেহারা। কাতারেই শেষবারের মতো বসেছিল ৩২ দলের আসর। যাতে বিশ্বকাপে খেলা হতো ৬৪ ম্যাচ। ‘কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো বিশ্বকাপ, ২০২৬’ থেকে আসর হবে ৪৮ দেশ নিয়ে। অর্থাৎ দেশের সংখ্যা বাড়ছে ১৬টি। ফলে বাড়বে ম্যাচসংখ্যাও। খেলা হবে ৮০ ম্যাচ। যে কারণে শেষ চারটি বিশ্বকাপের তুলনায় ২০২৬ আসরে ভেন্যুর সংখ্যাও বাড়াতে হয়েছে ফিফাকে। খেলা হবে ১৬টি ভেন্যুতে।
আয়োজনে কানাডা ও মেক্সিকো থাকলেও মূল আয়োজক হিসেবে থাকছে যুক্তরাষ্ট্র। আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি ভেন্যুতে হবে বিশ্বকাপের খেলা। দুই সহআয়োজক মেক্সিকোর ৩টি, আর কানাডার ২ স্টেডিয়ামে চলবে বিশ্বকাপের লড়াই।লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, ‘এটি এমন একটি মুহূর্ত যখন তিনটি দেশ এবং একটি সমগ্র মহাদেশ সম্মিলিতভাবে বলে যে, আমরা বিশ্বকে স্বাগত জানাতে এবং সর্বকালের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে বেশি দল নিয়ে ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপ উপহার দিতে চলেছি।’ আরও বলেন, ‘এই টুর্নামেন্ট আয়োজক দেশ এবং অংশগ্রহণকারীদের ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর সুযোগ করে দিচ্ছে।’
ট্রফিটির নিচে ২০২৬ বিশ্বকাপের বোল্ড ছাপ দেওয়া হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের লোগোতে সোনালি ট্রফি ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও অন্য আসরগুলোতে মূল ছবির পরিবর্তে অঙ্কিত কোনো ছবি ব্যবহার করা হতো। লোগোটিকে লাল, সাদা এবং নীল ঢালের বিপরীতে বিশেষভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
২০২৬ বিশ্বকাপের লোগো নির্বাচনে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে। পৃথিবীর ক্রমবর্ধবান ভোগবাদিতার বিপরীতে ‘মিনিমালিস্ট’ ধারণার প্রচারে খুবই সাদামাটা লোগো বেছে নিয়েছে ফিফা। যা খুব একটা পছন্দ হয়নি ফুটবলপ্রেমীদের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাই এরই মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে লোগোটি নিয়ে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বিরক্তিকর লোগো হিসেবে আখ্যা দিয়েছে তারা।
২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপে মোট ১০৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। আর ৪৮ দলের বর্ধিত কলেবর হলেও ৪ দলের গ্রুপ নিয়েই মাঠে গড়াবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপ। ১২টি গ্রুপে ৪৮টি দলকে ভাগ করা হবে। প্রতিটি গ্রুপে ৪টি করে দল থাকবে। আর প্রথমবারের মতো থাকবে রাউন্ড অব থার্টি-টু।
প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল শেষ ৩২-এ জায়গা করে নেবে। এর সঙ্গে প্রতিটি গ্রুপে তৃতীয় দলগুলোর মধ্যে ৮টি দল রাউন্ড অব থার্টি-টুতে জায়গা পাবে। এরপর ৩২ দল নিয়ে হবে নক-আউট পর্ব, এরপর যথাক্রমে শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল হবে।আগামী ২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে দলের সঙ্গে বাড়ছে ম্যাচ সংখ্যাও। ৪৮ দেশ নিয়ে বিশ্বকাপ মাঠে গড়াবে। যেখানে ম্যাচসংখ্যা হবে ৮০টি। বড় পরিসরে আয়োজিত হতে যাওয়া এই বিশ্বকাপে ভেন্যু হবে ১৬টি। আয়োজক দেশের মূল দায়িত্ব থাকছে যুক্তরাষ্ট্রের কাঁধে। তাদের সঙ্গে আয়োজনের দায়িত্বে মেক্সিকো আর কানাডা থাকলেও আমেরিকার ১১টি ভেন্যু পেয়েছে বিশ্বকাপের দায়িত্ব। যেখানে মেক্সিকোর ৩টি, আর কানাডার ২টি। ২০২৬ সালের ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই আসরটি মাঠে গড়াবে।