বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, হিসাব-নিকাশ করে চিনির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ট্যারিফ কমিশন। এখন যদি বাজারে অতিরিক্ত দামে পণ্যটি বিক্রি হয়, তাহলে আগামী সপ্তাহ থেকেই অ্যাকশনে যাব।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদকিদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
“এটিও ঠিক যে, যেটা ঠিক করে দেয়া হয়েছে, তার চেয়ে বেশি দামেও বিক্রি হচ্ছে। আমরা দেখছি, তাদের (ব্যবসায়ীদের) অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। আবার চিনি যদি বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়, সেটিও একটি সমস্যা। সবকিছু দেখেশুনেই আমরা চেষ্টা করছি,” যোগ করেন তিনি।মন্ত্রী বলেন, গত রমজানে চিনির দাম যৌক্তিক পর্যায়েই ছিল। আর তেলের দাম যে বৈশ্বিকভাবে বেড়েছে, তা কিন্তু না। কিন্তু ৩১ এপ্রিল পর্যন্ত ভ্যাট প্রত্যাহার করা অবস্থায় ছিল। সেই সময় শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে নতুন করে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। আর সেই টাকাটাই বাড়ানো হয়েছে।
চিনির দাম ঠিক করে দেয়া হলেও বাজারে তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা দেখি। যদি সেভাবে বিক্রি না হয়, তবে আমাদের ভোক্তা অধিকার তো আছেই।
বাজার থেকে প্যাকেটজাত চিনি হাওয়া হয়ে গেছে, প্যাকেটজাত চিনি অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরেই এমনটি দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজারে কি চলছে, সেটা বড় কথা না। ট্যারিফ কমিশন দেখে, কত দামে আমদানি করা হয়েছে, তার একটি গড় মূল্য নিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে এতে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়ে থাকে। যেমন আজকে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু নতুন দামের চিনি আসার আগেই তারা সুযোগ নিয়ে ফেলে।
আমাদের হিসাব হচ্ছে একটি অঙ্কের ম্যাথডে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসি। তারাও আমাদের সঙ্গে একমত হয়। কিন্তু একমত হলেও বাজারে তার প্রভাব পড়তে দেরি হয়। দেখা যাক, পরবর্তী সপ্তাহ থেকেই আমরা বাজারে অ্যাকশনে যাব। কারণ ব্যবসায়ীরা তো আমাদের সঙ্গে এই দাম নির্ধারণে একমত হয়েছে।
তবে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় বাংলাদেশে চিনি উৎপাদন প্রতিযোগিতামূলক হবে না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, সবচেয়ে ভালো হলো আমদানি করে নিয়ে আসা। কিন্তু পেঁয়াজ ও আলু উৎপাদন সম্ভব। দেশে চিনি উৎপাদন লাভজনক হবে না।
চিনির বাজারে চলমান অস্থিরতার মধ্যেই চিনির দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম খুচরা পর্যায়ে কেজিতে ১৬ টাকা বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এছাড়া প্রতিকেজি পরিশোধিত খোলা চিনির মিলগেট মূল্য ১১৫ টাকা ও পরিবেশক মূল্য ১১৭ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। আর প্রতিকেজি পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনির মিলগেট মূল্য ১১৯ টাকা ও পরিবেশক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২১ টাকা।