বিতর্কের বরপুত্র হয়ে ওঠা কাজী মো. সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো। সাবেক এ ফুটবলারের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, দাবি উঠেছে তার ডোপ টেস্ট করানোরও!
সাংবাদিকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতির পদ ছাড়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন। এদিকে সম্মানিক সদস্য পদ থেকে কাজী মো. সালাউদ্দিনকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ)।
কাজী মো. সালাউদ্দিন সম্পর্কে ব্যারিস্টার সুমন বলেছেন, ‘আমাদের (বাফুফে) সভাপতি সাহেব সাংবাদিকদের কটাক্ষ করেছেন, তাদের বাবা নিয়েও কথা বলেছেন। এ ধরনের কথা যারা বলেন, তাদের সুস্থতা নিয়েই আমি প্রশ্ন তুলি।’ আলোচিত এ আইনজীবী আরও বলেন, ‘পুলিশ বা অন্যান্য ডিপার্টম্যান্টে দেখবেন ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা আছে। মাদক নিয়ে থাকলে ডোপ টেস্টে ধরা পড়বে। ধরা পড়ার পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। আমার বিশ্বাস বাফুফেতে ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা থাকলে তারা (কাজী সালাউদ্দিনরা) দায়িত্বে থেকে এত কথা বলতে পারতেন না। আরও আগেই বহিষ্কৃত হতেন।’
মঙ্গলবার বাফুফে নির্বাহী সভার পর সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ সাংবাদিকদের নিয়ে কটাক্ষ করেন। এ কথোপকথনের মধ্যে কাজী মো. সালাউদ্দিনের অংশটা আলোচিত-সমালোচিত হয়। কিন্তু সাবেক এ ফুটবলারের চেয়ে আপত্তিকর ছিল সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদের অংশ। তথাকথিত এ সুশীল আবার একজন সংসদ সদস্যও।
কথোপকথনে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘জার্নালিস্টরা এখানে (বাফুফে ভবনে) ঢুকতে গেলে, আমার এখানে তাদের বাপ-মায়ের ছবি দিতে হবে। আরেকটা কন্ডিশন হলো, বাপের জুতা পরা ছবি থাকতে হবে।’ কাজী সালাউদ্দিনের কথার পর কাজী নাবিল বলেন, ‘আই রিকোয়েস্ট, হু গ্রিউ-আপ ওয়্যারিং আন্ডারওয়ার অ্যান্ড হু ডিড নট।’
কাজী সালাউদ্দিন ও কাজী নাবিল আহমেদের এমন মন্তব্যকে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ উল্লেখ করে বিএসপিএ তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে। সংগঠনটি বিবৃতিতে উল্লেখ করে, সাংবাদিকদের ওপর তাদের কতটা বিদ্বেষ, সেটা প্রকাশ পেয়েছে কথাবর্তায়। তারা শুধু সাংবাদিকদের নয়, তাদের পরিবার এমনকি সাংবাদিকদের মা-বাবাকে পর্যন্ত কটাক্ষ করতে ছাড়েননি।
বিবৃতিতেই সম্মানিক সদস্য পদ থেকে কাজী সালাউদ্দিনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়, ‘লিজেন্ডারি খেলোয়াড় হিসাবে বাফুফে সভাপতি পদে বসার পর কাজী মো. সালাউদ্দিনকে ২০১২ সালে বিএসপিএ সম্মানসূচক সদস্য পদ দিয়ে আপন করে নিয়েছিল। পরীক্ষিত ক্রীড়া সংগঠক, লিজেন্ড খেলোয়াড় এবং মিডিয়া সংশ্লিষ্ট ক্রীড়া সংগঠকদের অনারারি সদস্য পদ দেওয়ার রেওয়াজ আছে এ সংগঠনের। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার আচরণ, বক্তব্য সবকিছুই এই ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া সাংবাদিক সংগঠনের মতাদর্শের পরিপন্থি। এ কারণেই তাকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’