রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাজারে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও পরিপক্ব আম নিশ্চিত করতে ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার আম সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাত মনিটরিং সংক্রান্ত সভায় আম নামানোর তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছরের সব ধরনের গুটি জাতের আম নামানো যাবে আগামী ৪ মে থেকে। আর উন্নত জাতের আমগুলোর মধ্যে গোপালভোগ ১৫ মে, লক্ষণভোগ বা লখনা ও রাণীপছন্দ ২০ মে এবং হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৫ মে থেকে নামিয়ে হাটে তুলতে পারবেন বাগান মালিক ও চাষিরা।
এছাড়া ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে ফজলি ও ১০ জুন আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ নামানো যাবে। ১০ জুলাই থেকে গৌড়মতি আম এবং ২০ আগস্ট ইলামতি আম নামানো যাবে। কাটিমন ও বারি আম-১১ সারা বছর সংগ্রহ করা যাবে। নির্ধারিত সময়ের আগে আম বাজারে পেলে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। তবে কারও বাগানে নির্ধারিত সময়ের আগেই আম পাকলে তা প্রশাসনকে জানাতে হবে।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, রাজশাহীর ঐতিহ্য হচ্ছে আম। বাজারে পরিপক্ব ও নিরাপদ আম নিশ্চিত করতে প্রতিবছরই রাজশাহীতে তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এবারও সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে তারিখ ঠিক করা হয়েছে। এর আগে যদি কোনো মালিকের আম গাছে পেকে যায়, তাহলে তাকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রত্যায়নপত্র নিয়ে গাছ থেকে নামাতে পারবেন। এরপর বাজারজাত করতে পারবেন।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, হাটগুলোতে সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনাররাও বিষয়টি দেখভাল করবেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, বাজারে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও পরিপক্ব আম নিশ্চিত করতে ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ন করা হয়েছে। সভায় নির্দিষ্ট তারিখ বেঁধে দেওয়া হয়েছে, এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে হবে।
তিনি আরও জানান, রাজশাহীতে এ বছর ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯৮৬টি আম গাছ রয়েছে। এবার জেলায় ৯৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছিল। গত বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল। এবার বাগান বেড়েছে ১ হাজার ৬৩ হেক্টর জমিতে। এ বছর হেক্টর প্রতি ১৩ দশমিক ২০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলায় এ বছর মোট ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু সালেহ মো. আশরাফুল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) আনিসুল ইসলাম।