সুদানের যুদ্ধরত সামরিক দলগুলো নীতিগতভাবে সাত দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে প্রতিবেশী দক্ষিণ সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খার্তুম অঞ্চলে অব্যাহত বিমান হামলা ও গুলিবর্ষণ সর্বশেষ স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতিকে ব্যাহত করেছে।
সংঘর্ষে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেওয়া দক্ষিণ সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে বলেছে, প্রেসিডেন্ট সালভা কিরের মধ্যস্থতায় দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার জন্য দূতদের নাম দিতে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে।
তবে সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং আধা-সামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো এই সময় কীভাবে কাজ করতে পারেন তা স্পষ্ট নয়। এর আগেও ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার পূর্ববর্তী চুক্তিগুলো ক্ষুণ্ন করে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সুদানের যুদ্ধ এক লাখ মানুষকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। যুদ্ধ তৃতীয় সপ্তাহে গড়ানোর পর গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলেছেন, যুদ্ধের কারণে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে
সংঘাতটি একটি বৃহত্তর বিপর্যয়ে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে। কারণ সুদানের দরিদ্র প্রতিবেশীরা শরণার্থী সংকট মোকাবিলা এবং এমন একটি দেশে সাহায্য বিতরণে বাধা সৃষ্টি করে, যেখানে দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ ইতোমধ্যে বাইরের সহায়তার ওপর নির্ভর করে।
এদিকে মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল-ফাত্তাহ আল-সিসি বলেছেন, কায়রো সুদানে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে সংলাপের জন্য সমর্থন দেবে, তবে ‘তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করে’।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলেছেন, জাতিসংঘের সহায়তা প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস মঙ্গলবার সুদান সফর করার পরিকল্পনা করছেন। তবে সফরের সময় এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সোমবার বলেছে, সংঘাতের শুরুতে কিছু বিরতির পর এটি দেশের নিরাপদ অংশে কাজ পুনরায় শুরু করছে, যেখানে সংস্থার কিছু কর্মী নিহত হয়েছিল। সংস্থাটির পূর্ব আফ্রিকার পরিচালক মাইকেল ডানফোর্ড বলেছেন, ‘ঝুঁকি হলো, এটি শুধু সুদানে সংকট নয়, এটি একটি আঞ্চলিক সংকট হতে চলেছে।’
সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের কমান্ডাররা, যারা অবাধ নির্বাচন ও বেসামরিক সরকারের দিকে আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থিত উত্তরণের অংশ হিসেবে ক্ষমতা ভাগ করে নিয়েছিলেন, তারা পিছিয়ে যাওয়ার কোনো লক্ষণ দেখাননি। তবুও তারা দ্রুত বিজয় নিশ্চিত করতে সক্ষম বলে মনে হয় না। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের আভাস উত্থাপন করেছে, যা বাইরের শক্তিগুলোকে আকর্ষণ করতে পারে।