তিউনিসিয়ার উপকূলে ১০ দিনে দুই শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু

তিউনিসিয়ার উপকূলে ১০ দিনে দুই শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু

আন্তর্জাতিক
তিউনিসিয়ার উপকূল থেকে গতকাল শুক্রবার ৪১টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ১০ দিনে ২১০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তিউনিসিয়ার উপকূলরক্ষী। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

তিউনিসিয়ার ন্যাশনাল গার্ডের মুখপাত্র হুসেম এদ্দিন জেবাবলি বলেছেন, ‘মরদেহগুলোতে পচন ধরেছে। এ থেকে বোঝা যায়, মরদেহগুলো বেশ কয়েক দিন ধরে পানিতে ডুবে ছিল।’ তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেন, ‘এত অল্প সময়ের মধ্যে উপকূলে এত অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু নজিরবিহীন।’

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশ লিবিয়া মানব পাচারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার পর সাব-সাহারা আফ্রিকা, সিরিয়া ও সুদানের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে তিউনিসিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ফলে প্রায়ই তিউনিসিয়ার উপকূলে অভিবাসীবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকাডুবির ঘটনা এতটাই বেড়েছে যে তিউনিসিয়ার মর্গে মরদেহের জায়গা হচ্ছে। কবর দেওয়ার জায়গাও ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে। বন্দর শহরের বিচার কর্মকর্তা ফৌজি মাসমুদি বলছেন, শুক্রবারে লঞ্চপ্যাড শহরের হাসপাতালগুলোর মর্গ মরদেহ দিয়ে ভরে গেছে।

ইতালির ল্যাম্পেডুসা দ্বীপ থেকে তিউনিসিয়া উপকূলের দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটারেরও কম। ফলে ইতালি পৌঁছার সহজ পথ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই অভিবাসনপ্রত্যাশীরা এই ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথ ব্যবহার করেন।

তিউনিসিয়ান ফোরাম ফর ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল রাইটস (এফটিডিইএস) নামের একটি সংগঠনের রমধনে বেন আমোর জানিয়েছেন, চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ২২০টি মৃতদেহ রেকর্ড করা হয়েছে। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বেশির ভাগই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিক ছিলেন।

বেন আমের আরও বলেছেন, তিউনিসিয়ার উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকাডুবির ঘটনা এতটাই বেড়ে গেছে যে তিউনিসিয়া সরকার বাধ্য হয়ে তাদের জন্য একটি বিশেষ কবরস্থান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ অভিবাসনপ্রত্যাশীরা বেশির ভাগই বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত দেশের নাগরিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *