ফারদিন হত্যা মামলার অধিকতর তদন্ত করবে সিআইডি

ফারদিন হত্যা মামলার অধিকতর তদন্ত করবে সিআইডি

বাংলাদেশ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ হত্যা মামলাটির অধিকতর তদন্ত করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্ত ইসলাম মল্লিক এই নির্দেশ দেন।

আজ নারাজি আবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। সকালে ফারদিনের বাবা মামলার বাদী নূর উদ্দিন রানা আদালতে হাজির হয়ে নারাজির আবেদন করেন। আদালত তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

বাদী আদালতকে বলেন, তিনি নিশ্চিত তাঁর ছেলে ফারদিনকে হত্যা করে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি নিজে ছেলের লাশ দেখেছেন। ছেলের মাথায় পাঁচটি আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা, ফোলা ও জখম ছিল।

জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা সঠিকভাবে তদন্ত করেননি। তিনি কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালত তাঁর নারাজি আবেদন গ্রহণ করেন এবং অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

বাদীর আইনজীবী প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৪ মে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতে ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন সিকদার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, এই মামলায় তথ্যগত ভুল রয়েছে। ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন। ফারদিনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এবং সিসিটিভি সূত্রে পাওয়া গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এসব পর্যালোচনায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন।

ফারদিনের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যগুলো যাচাই করে দেখা গেছে, তিনি স্পেনে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্পেনে যাওয়ার টাকা জোগাড় করতে পারেননি। এ কারণে তিনি ভেঙে পড়ছিলেন। অন্যদিকে বুয়েটের একাডেমিক বিভিন্ন পরীক্ষায় ক্রমাগত ফলাফল খারাপ করে আসছিলেন। ফারদিন এসব কারণে হতাশায় নিমজ্জিত হন। একপর্যায়ে তিনি জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন।

গত বছরের ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধার করে নৌপুলিশ। এ ঘটনায় বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে রামপুরা থানায় মামলা হয়। ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে ওই মামলা করেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর ফারদিন নূর পরশকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার অভিযোগে রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে বুশরাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় আদালত তাঁর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ৮ জানুয়ারি ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত তাঁকে জামিন দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *