‘এক চীন’ নীতির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই । সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনায় তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।
রোববার সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
তিনি জানান, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন। এরপর তারা চারটি চুক্তি ও সমঝোতা সই করেছেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, চীন পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের জন্য একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যৌথ সহযোগিতা চায়। এ উদ্যোগে তারা বাংলাদেশকে পাশে চায়। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলোচনায় উল্লেখ করেছেন, কিছু রাষ্ট্র আছে, যারা ভুল বোঝে বা চীনকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে। ওই বিষয়ে কিছুটা কথা হয়েছে।
ওয়াং ই এমন এক সময়ে ঢাকায় এলেন, যখন তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই) এবং গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভের (জিএসআই) মতো উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছেন।
চীন এসব উদ্যোগে বাংলাদেশকে পাশে চায়। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, তা জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এটা একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক। নিয়ম অনুযায়ী তারা যেটা বলেছেন, তা জনসমক্ষে কতটা আনা হবে, সেটা তাদের বিষয়। অবশ্যই এ ব্যাপারে (তাইওয়ান, জিডিআই ও জিএসআই) বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তারা এসব বলেছেন। এটা আলোচনার বিষয় নয়। আমাদের অগ্রাধিকারে আরও অন্যান্য বিষয় আছে। তবে তারা তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। এক চীন নীতি নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের জন্য তারা ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আমরা আমাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছি বলে তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
এ নিয়ে আরেকটি প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি তাদের বিষয়। আমরা তো জানি যে তাইওয়ান ইস্যুতে তারা আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মানার বিষয়টিতে জোর দেয়। তারা আমাদের কাছে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে।
চুক্তি গুলো হচ্ছে পিরোজপুরে অষ্টম বাংলাদেশ-চায়না মৈত্রী সেতুর হস্তান্তর সনদ, দুর্যোগ মোকাবিলা সহায়তার জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারকের নবায়ন, ২০২২-২৭ মেয়াদে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা সমঝোতা স্মারকের নবায়ন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চীনের ফার্স্ট ইনস্টিটিউট অব ওশেনোগ্রাফির মধ্যে মেরিন সায়েন্স নিয়ে সমঝোতা স্মারক।
দুই দিনের সফরে ওয়াং ই গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকায় আসেন। সফরের দ্বিতীয় দিনে আজ সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের নিয়ে প্রাতরাশ বৈঠকে অংশ নেন।