রাজধানীর শাহবাগ মোড়। প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষার পর আসছে একটি-দুটি বাস। সেই বাসও যাত্রীতে ঠাসা, দরজার হাতল ধরে ঝুলে আছে অনেক যাত্রী। এখানে অপেক্ষারত মানুষ যে ঝুলেও কোনোভাবে বাসে উঠবে, সেই সুযোগও নেই।
শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এমন দুর্ভোগে পড়েছে রাজধানীর মানুষ। শনিবার সকাল থেকে রাজধানীতে আগের মতো বাসের দেখা মিলছে না। দীর্ঘ সময় পর পর দু-একটি বাস এলেও তাতে উঠতে পারছে না যাত্রীরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীর কর্মজীবী মানুষ।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে পূর্বঘোষণা ছাড়াই গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছেন বাসমালিকেরা। সকাল থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়েও গণপরিবহনে উঠতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে সাধারণ যাত্রীরা।
আজ শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগ, আজিমপুর, সায়েন্স ল্যাব মোড়, কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেটসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো ঘুরে এ অবস্থা দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছে শত শত মানুষ। মাঝেমধ্যে দু-একটি বাস এলেও সেগুলো যাত্রীতে পরিপূর্ণ। বিভিন্ন স্থানে দু-একজন নেমে গেলেও হুড়োহুড়ি করে উঠছে অনেক বেশি। অনেকে বাসে উঠতে পারবে না এমন আশঙ্কা থেকে হেঁটেই গন্তব্যে রওনা দিয়েছে। এদিকে বাসের সংকটে সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশাচালকেরাও চাইছেন বাড়তি ভাড়া।
সায়েন্স ল্যাব মোড়ে দীর্ঘ সময় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো বাসে উঠতে না পারা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে শাহ আলম জানান, দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। যেসব বাস আসছে, তার সবই যাত্রীতে পূর্ণ। কোনোভাবে যে ঝুলে বাসে উঠবেন, সেই সুযোগও পাচ্ছেন না তিনি। শাহ আলম বলেন, ‘হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ভোগান্তিটাই বেশি বেড়েছে। আমাদের কথা চিন্তা করার কেউ নেই।’
এর আগে গতকাল রাতে ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। নতুন দাম কার্যকর হয়েছে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী লিটারে ডিজেল ৩৪ টাকা, পেট্রল ৪৪ এবং অকটেনের দাম বেড়েছে ৪৬ টাকা। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রলের দাম ১৩০ টাকা। এর ফলেই ঢাকায় হঠাৎ করে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যায়।