স্বাস্থ্যখাতে নেওয়া উদ্যোগগুলো থামিয়ে দিয়েছিল বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী

স্বাস্থ্যখাতে নেওয়া উদ্যোগগুলো থামিয়ে দিয়েছিল বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ
স্বাস্থ্যখাতে আওয়ামী লীগের নেওয়া বিশেষ উদ্যোগগুলো বিএনপির সময় থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (৯ জানুয়ারি) দেশের বিভাগীয় ৮টি শহরে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। দেশের বিভাগীয় শহরের একযোগে এ অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এরপর থেকেই আমরা পদক্ষেপ নিই, কীভাবে এদেশের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থসেবা পৌঁছে দেওয়া যায়। সেটা চিন্তা করে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগা নিয়েছলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়।

বন্ধ করে দেওয়ার পেছনে তাদের উদ্দেশ্য ছিল, যদি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো চালু থাকে, তবে ওই অঞ্চলের সব মানুষ নৌকায় ভোট দেবে। অর্থাৎ তাদের কাছে রাজনৈতিক স্পৃহাটাই বড় ছিল, মানুষের সেবাটা না! যাই হোক, পরে আমরা সরকারে এসে আবার তা চালু করেছি।

সরকারপ্রধান বলেন, এদেশের মানুষের জন্য শোষিত-বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রাম করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর স্বাধীনতার পর একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব তিনি নিয়েছিলেন।

সেই অবস্থাতেও তিনি স্বাস্থ্যসেবাটা যেন জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছায়, সে ব্যবস্থা নেন। তিনি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, প্রতি ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হবে এবং সেভাবে তিনি প্রায় ৩৭৫টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করে চিকিৎসা সেব জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

দেশের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে আধুনিক একটি হাসপাতালে রূপান্তরের ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, (নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে) সেখানে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে পারবেন প্রায় ৫ হাজার রোগী। একই সঙ্গে বিশেষায়িত চিকিৎসার ব্যবস্থাও থাকবে সেখানে।

তিনি বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ অত্যন্ত পুরনো। বিশেষ করে কলেজ বিল্ডিংয়ের অবস্থা খুবই খারাপ, যে কোনো সময় ধসে পড়ে যেতে পারে- এমন একটা অবস্থা দাঁড়িয়েছে। আমরা সেখানে সম্পূর্ণ আধুনিক একটি হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।

পরিকল্পিত এই আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ভবনের নির্মাণ কাজ শিগগিরই শুরু হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে এটা করা যাবে না, সে কারণে একেকটা উইং আলাদাভাবে ধাপে ধাপে তা সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেন একই সঙ্গে চিকিৎসাও চলে আবার উন্নয়নের কাজও চলমান থাকে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, এক বছরের নিচে এবং ৬৫ বছরের ওপরে বয়সীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার কথাও ভাবছে সরকার।
এ সময় ওমিক্রনের বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বলেন, ওমিক্রনের বিস্তার ঠেকাতে টিকাদন কর্মসূচি জোরদারসহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

তিনি বলেন, আমি সবাইকে অনুরোধ করবো টিকা নেওয়ার জন্য। টিকা নেওয়ার ফলে অন্তত আপনার জীবনটা রক্ষা পাবে। করোনা আক্রান্ত হলেও হয়ত কিছুদিন ভুগতে হবে, তবে জীবনটা রক্ষা পাবে। তাই আপনারা ভয় না পেয়ে টিকা গ্রহণ করুন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা রোগী নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কিছুটা সময় যদি আপনারা ব্যয় করেন, গবেষণায় নজর দেন, আমাদের দেশের আবহাওয়া-জলবায়ু, এদেশের মানুষের কী কী ধরনের রোগ দেখা দেয়, প্রতিরোধ শক্তি কীভাবে বাড়ানো যায়, সেটি কিন্তু তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। পর থেকে ধাপে ধাপে করে দিয়েছি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *