ফিলিপাইনের সুপার টাইফুন রাইয়ে মৃত্যু বেড়ে ২০৮

ফিলিপাইনের সুপার টাইফুন রাইয়ে মৃত্যু বেড়ে ২০৮

আন্তর্জাতিক
ফিলিপাইনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা সুপার টাইফুন রাইয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০৮-এ দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৩৯ জন আহতকে উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ রয়েছেন ৫২ জন। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে।

উদ্ধারকারীদের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কিছু কিছু এলাকা দেখলে মনে হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও শক্তিশালী কোন বোমা হামলা চালানো হয়েছে।’ খাদ্যের অভাবে মৃতের শঙ্কা বাড়ার আশঙ্কা করছে রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি। ত্রাণ কর্মসূচি পরিচালনার জন্য এই প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ২ কোটি ২০ লাখ ডলার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সবকিছু হারিয়েছেন এমন লোকদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা।

এর আগে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোর ৫টায় সুপার টাইফুন রাই ফিলিপাইনে আঘাত হানে। টাইফুনটির কেন্দ্রের কাছে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার। এই টাইফুনে প্রথমে ১২ জন, পরে ৩৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। গতকাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ৭৫। তবে সেনাবাহিনী, পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের ১৮ হাজারের বেশি সদস্যের সম্মিলিত উদ্ধার অভিযানে আজ পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া মরদেহের সংখ্যা ২০৮।

প্রতিবেদনে রাইকে বলা হচ্ছে গত এক দশকের মধ্যে ডিসেম্বরে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়গুলোর একটি। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অবকাশ যাপনের জন্য বিখ্যাত দ্বীপ সিয়ারগাঁও। টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন গ্রাম-ফসলের মাঠ প্লাবিত হয়েছে। বহু এলাকায় রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে যাওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছ।

বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। বহু বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে। বাড়ি-ঘর ও সমুদ্রতীরবর্তী রিসোর্টগুলো থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে গেছে ৩ লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলে টাইফুনের প্রভাবে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে মোট ক্ষতির পরিমাণ এখনই বলা যাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ুগত দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর একটি ফিলিপাইন। বছরে এখানে গড়ে ২০টি টাইফুন আঘাত হানে। জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বর্ষাকাল থাকায় বেশির ভাগ টাইফুন এই সময়েই হয়ে থাকে। এর আগে ২০১৩ সালে টাইফুন হাইয়ানে দেশটির ৬ হাজারের বেশি নাগরিক মারা গেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *